প্রায় ছয় বছর পর যেন মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছেন হলিউড অভিনেত্রী ও গায়িকা স্কারলেট জোহানসন। ২০১৯ এর ২৪ অক্টোবর মুক্তি মুক্তি পাওয়া ‘জোজো র্যাবিট’ ছিল তার সর্বশেষ ব্যবসাসফল সিনেমা। তাইকা ওয়েইতি পরিচালিত ওই সিনেমা নির্মাণে খরচ হয়েছিল মাত্র ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর সেটি বক্স অফিস থেকে আয় করেছে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার।
এর পরের বছরগুলোতে যেন খরা নেমে আসে চল্লিশ বছর বয়সী এ তারকার। তার অভিনীত পরবর্তী সিনেমাগুলো একের পর এক মুখ থুবড়ে পড়ে বক্স অফিসে। এবার যেন ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। এ বছর পরপর তার তিনটি সিনেমা মুক্তি পাবে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত। ধারণা করা হচ্ছে বছরটি যেন হবে স্কারলেটেরই। মে মাসে তার নাম নিয়ে দুটি সিনেমা মুক্তি পাবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে। একটি তার পরিচালনায়। দ্বিতীয়টি তার অভিনীত। আর অভিনীত অন্য সিনেমাটি আলোর মুখ দেখবে ২ জুলাই।
‘ক্যাপটেইন আমেরিকা’ খ্যাত স্কারলেট জোহানসনের পরিচালক হিসাবে অভিষিক্ত সিনেমা ‘ইলিনর দ্য গ্রেট’ প্রদর্শিত হবে আগামী মাসে। এ সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুন স্কুইব, শিওয়েট ইজিওফর, জেসিকা হেচ, এরিন কেলিম্যান প্রমুখ। ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া ১৯ বছরের যুবকের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সাজানো হয়েছে সিনেমাটি।
আর এ কারণেই এটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ওয়েজ এন্ডারসন পরিচালিত স্কারলেট অভিনীত স্পাই থ্রিলার ব্ল্যাক কমেডি সিনেমা ‘দ্য ফোনেশিয়ান স্কিম’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৩০ মে। উৎসবে এ সিনেমা প্রতিযোগিতা করবে আলফা, ঈগল্স অব দ্য রিপাবলিক, দ্য হিস্টোরি অব সাউন্ড-সহ ১৮টি ভিনদেশী সিনেমার সঙ্গে।
এ বছর স্কারলেট অভিনীত আকর্ষণীয় সিনেমাটি হচ্ছে গেরেথ এডওয়ার্ডস পরিচালিত সায়েন্স ফিকশন অ্যাকশন থ্রিলার ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’। ২ জুলাই মুক্তি প্রতিক্ষীত এ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র জোরা বেনেটের ভ‚মিকায় অভিনয় করছেন স্কারলেট। এ সিনেমায় তার সঙ্গে আরো অভিনয় করেছেন- মাহেরশালা আলি, জোনাথন বেইলি, রুপার্ট ফ্রেন্ড, লুনা বেইজি প্রমুখ। ডাইনোসর সিরিজের সিনেমা হওয়া এ থ্রিলারের প্রতি এরই মধ্যে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
এদিকে গায়িকা হিসাবে স্কারলেট জোহানসনের ক্যারিয়ার অনেকটাই থমকে গেছে। মৌলিক গানে তার খুব আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ফিচার সঙ্ নিয়ে এগোচ্ছে তার সংগীত ক্যারিয়ার। ১৯৬৪ সালে ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার গাওয়া ‘দ্য বেস্ট ইজ ইয়েট টু কাম’ গানটি এ বছরই ফিচারাইজ করেছেন স্কারলেট। গানটি ১৯৫৯ সালে কম্পোজ করেছিলেন সাই কোলম্যান। ২০০৮ সালে বেরিয়েছিল স্কারলেটের প্রথম অ্যালবাম ‘এনি হয়্যার আই লে মাই হেড’। পরের বছরই প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় ও শেষ অ্যালবাম ‘ব্রেক আপ’। এরপর সিঙ্গেলসেই গড়িয়েছে তার সংগীত ক্যারিয়ার।
ফ্লপ কমেডি ড্রামা অ্যাডভেঞ্চার সিনেমা ‘নর্থ’-এর মাধ্যমে ১৯৯৪ সালে একটি গৌন চরিত্র দিয়ে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন স্কারলেট। মূল চরিত্রের অভিনেত্রী হওয়ার জন্য তাকে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র দু’বছর পরই নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন লিসা ক্রুজার পরিচালিত ‘মেনি অ্যান্ড লো’ সিনেমায়। কোনোমতে এটি পুঁজি তুলে এনেছিল।
এ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এ মূল চরিত্রের সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পুরস্কার না পেলেও এ মনোনয়ন তার কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েক গুণ। একের পর এক হলিউডকে উপহার দিতে থাকেন ‘দ্য হর্স হুইসপারার’, ‘গোস্ট ওয়ার্ল্ড’, ‘ম্যাচ পয়েন্ট’, ‘দ্য প্রেস্টিজ’, ‘স্কুপ’, ‘ভিকি ক্রিস্টিনা বার্সেলোনা’, ‘ক্যাপ্টেইন আমেরিকা’র মতো সিনেমাগুলো।
তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফল সিনেমা ‘অ্যাভেঞ্চার্স : ইনফিনিটি ওয়ার’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালে। মাত্র ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচের সিনেমাটি আয় করেছে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।