ঢাকাই সিনেমার নন্দিত নায়ক রিয়াজ। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে লাভার বয় খেতাব পাওয়া এই নায়ক বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) তার জন্মদিন।
১৯৭২ সালের ২৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন রিয়াজ। বুধবার জীবনের ৫০তম বছর স্পর্শ করলেন দেশের জনপ্রিয় এই অভিনেতা। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাকে। পরিবার, স্বজন, ভক্ত ও সহকর্মীরা যে যার মতো করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তাকে।
রিয়াজের সঙ্গে বেশ কিছু সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন শাবনূর। যার প্রায় সবগুলো জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল। রিয়াজ এখনও অভিনয়ে থাকলেও শাবনূর নেই। দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। সেখান থেকেই রিয়াজের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে।
নিজের ফেসবুক পেজে শাবনূর জানান, রিয়াজ এত কিউট ছিল যে, তাকে শাবনূর ‘রাঙা মুলো’ বলে ডাকত।
বুধবার রাতে এক পোস্টে শাবনূর লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন রিয়াজ। তোমার কি মনে আছে, চলচ্চিত্রে প্রথম তুমি যখন এসেছিলে তখন আমি তোমার নাম দিয়েছিলাম রাঙা মুলো। কারণ তুমি ভীষণ কিউট ছিলে! তুমি আমার কাছে এমন রাঙা মুলো হয়েই থাকবে আজীবন!’
তিনি আরো লেখেন, ‘অসংখ্য রোমান্টিক সিনেমা করেছি দুজন একসঙ্গে! আমাদের অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে!’
অনেক স্মৃতি থেকে একটা একটা ঘটনা উল্লেখ করে শাবনূর লেখেনে, “বিয়ের ফুল সিনেমান ‘মন না দিলে হয় কি প্রেম তাই’ গানের শুটিং করছিলাম কক্সবাজার এক হোটেলের সামনে! আমার পায়ের কাছেই ছিল একটি বিষধর সাপ যা আমি খেয়াল করিনি আর তুমিও বলোনি কারণ আমি সাপ ভীষণ ভয় পেতাম! তুমি সাপটিকে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরেই শটটি সম্পূর্ণ করেছিলে আর পুরো ঘটনাটাই ছিল আমার অজানা! শট দেওয়ার পর আমি তা জানার সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ে দিয়েছিলাম এক দৌড়। এমন আরো অনেক মজার স্মৃতি তোমার সঙ্গে রয়েছে!’
লেখার শেষে জন্মদিনে রিয়াজকে অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা জানান শাবনূর। বলেন, ‘ভালো থাকো সবসময়’।
রিয়াজ কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বিমান বাহিনীতে। সেখান থেকে ঘটনাচক্রে প্রয়াত নায়ক জসীমের হাত ধরে ‘বাংলার নায়ক’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নায়ক রিয়াজের অভিষেক হয় ১৯৯৫ সালে। ১৯৯৭ সালে মহম্মদ হান্নান পরিচালিত ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয় নায়কে পরিণত হন তিনি।
এরপর শাবনূরের সঙ্গে জুটি বেঁধে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান রিয়াজ। নানা কারণে সেই জুটি ভেঙে গেলে পূর্ণিমার সঙ্গেও জুটি বেঁধে দারুণ সাফল্য পান তিনি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে রিয়াজ উপহার দিয়েছেন ‘নারীর মন’, ‘বিয়ের ফুল’, ‘এই মন চায় যে’, ‘হৃদয়ের আয়না’, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’, ‘প্রেমের তাজমহল’, ‘স্বপ্নের বাসর’, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’, ‘হৃদয়ের বন্ধন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘কাজের মেয়ে’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘সাবধান’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘খবরদার’, ‘লাল দরিয়া’, ‘মিলন হবে কতদিনে’, ‘শাস্তি’, ‘কি যাদু করিলা’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘পাগল তোর জন্য’সহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ও প্রশংসিত সিনেমা।
এ ছাড়া রিয়াজ ভারতীয় চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা মহেশ মাঞ্জরেকারের ‘ইট ওয়াজ রেইনিং দ্যাট নাইট’ নামে একটি ইংরেজি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। কলকাতার সঙ্গে বেশকিছু যৌথ প্রযোজনার সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে। যার মধ্যে ‘মনের মাঝে তুমি’ সিনেমার সাফল্য উল্লেখ করার মতো।
প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নন্দিত নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের স্নেহভাজন ছিলেন নায়ক রিয়াজ। এই নির্মাতার ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমায় রিয়াজকে দেখা গেছে। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের বহু নাটকে অভিনয় করেছেন রিয়াজ।
অভিনয় ক্যারিয়ারে বেশকিছু মানসম্পন্ন বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে রিয়াজকে। একজন সফল উপস্থাপক হিসেবেও রিয়াকেজ পাওয়া গেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বিটিভির আনন্দমেলাসহ বহু অনুষ্ঠানে।
অনেকদিন ধরেই সিনেমায় ছিলেন না। সেই বিরতি ভেঙে আবারো পর্দায় হাজির হয়েছেন ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমা দিয়ে। এখানে তাকে র্যাব কর্মকর্তার চরিত্রে দেখেছেন দর্শক। এছাড়া অনন্য মামুন পরিচালিত ‘রেডিও’ নামের একটি সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিয়াজ।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘দুই দুয়ারী’ (২০০০), ‘দারুচিনি দ্বীপ’ (২০০৭) ও ‘কি যাদু করিলা’ (২০০৮)।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.
