সমুদ্রে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। এসব ইলিশ বিক্রি নিয়ে সমুদ্র পাড়ের বিভিন্ন ঘাটে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় ফিশারি ঘাট, রাসমনির ঘাট, আনন্দবাজার ঘাট, উত্তর কাট্টলী ঘাট, দক্ষিণ কাট্টলী ঘাট, আকমল আলী ঘাটে সকাল এবং রাতের বেলায় ইলিশ বিক্রিকে ঘিরে চলছে উৎসব। এসব ঘাটে এক কেজি সাইজের ইলিশ ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে এবং ৫০০ গ্রামের চেয়ে ছোট ইলিশ ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি জেলেরাও।
মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতি চট্টগ্রাম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ওরফে বাবুল সরকার বলেন, ‘শুরু থেকে এবার সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। আকারেও বড়। প্রতিদিন ভোর পাঁচটা থেকে ৯টা পর্যন্ত ফিশারি ঘাটে সাগর থেকে ইলিশ মাছ নিয়ে আসছেন জেলেরা। রাতের বেলায়ও ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরছেন তারা। প্রায় দুইশ’র বেশি ট্রলার সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরায় কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ফিশারি ঘাটে ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রামের ওজনের ইলিশ ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা এবং এর থেকে ছোট আকৃতির ইলিশ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানা গেছে, শুধুমাত্র সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে এমন নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৫ হাজার ২৩ জন। গত ২০ মে থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। গত ২৪ জুলাই থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হয়। মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময়ে জেলেদের চাল দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতর সহকারী পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘সমুদ্রে মাছ ধরার কাজে পাঁচ লাখ জেলে নিয়োজিত আছেন। এরমধ্যে ৩২ হাজার ছোট নৌযান আছে যেগুলো দিয়ে সমুদ্রের ৪০ মিটার গভীরতার মধ্যে মাছ শিকার করা হয়। সমুদ্রের ৪০ মিটারের গভীরতার বাইরে গিয়ে মাছ শিকারে নিয়োজিত আছে ২৩৫টি ট্রলার। এখন ইলিশ ধরার মৌসুম। যেহেতু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে, জেলেরা এখন ইলিশ ধরা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। সমুদ্রে এখন প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।’
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, ‘এবার শুরু থেকে সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। চট্টগ্রামের সমুদ্র পাড়ের ফিশারি ঘাটগুলোতে এখন মাছ বিক্রির উৎসব চলছে।’ জেলেরা ইলিশের ভালো দাম পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।