সর্বাধিক সন্তান জন্মদানের বিশ্ব রেকর্ডধারী এক মাকে চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন যে, সন্তান প্রসব বন্ধ করে দিলে তিনি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে পারেন। চিকিৎসকের এই সতর্কতার পর মরিয়ম নাবাতাঞ্জি নামের ওই মা ৪০ বছর বয়সে ৪৪ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। চিকিৎসকরা তাকে বলেছিলেন, কোনও পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি তার জন্য কাজ করবে না।
মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক পোস্ট বলছে, পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বাসিন্দা মরিয়ম নাবাতাঞ্জি। এখন পর্যন্ত তিনি জমজ সন্তান জন্ম দিয়েছেন চার বার। একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পাঁচ বার। আরও পাঁচ বার একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম। এছাড়া মাত্র একবার এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।
মরিয়মের ছয় সন্তান পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। এক সময় স্বামী সব অর্থ-কড়ি নিয়ে তাকে ফেলে রেখে যান। শূন্য হাতেই ২০ ছেলে এবং ১৮ মেয়েকে লালন-পালনের দায়িত্ব একাই পালন করেন মরিয়ম। ছোট বেলায় মরিয়মকে বিক্রি করে দেন তার বাবা-মা। পরে মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় তার। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, উগান্ডায় নারীদের সন্তান জন্মদানের হার অনেক বেশি। দেশটিতে প্রত্যেক নারী গড়ে প্রায় ৫ দশমিক ৬ সন্তানের জন্ম দেন। যা একজন নারীর সন্তান জন্মদানের বৈশ্বিক গড় ২ দশমিক ৪ শিশুর দ্বিগুণেরও বেশি।
মরিয়মের এই গল্প অত্যন্ত দুঃখের। ছোটবেলায় বাবা-মা তাকে বিক্রি করে দেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য হন তিনি।
মরিয়ম নিজ দেশে ‘মা উগান্ডা’ হিসেবে পরিচিত। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরই বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি অন্য নারীদের মতো নন। জমজ, তিন এবং চার সন্তানের জন্মের পর তিনি দেশটির একটি স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে গিয়েছিলেন।
সেই সময় চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, তার ডিম্বাশয় স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বড়। যা হাইপারোভুলেশন নামের একটি প্রজনন সমস্যা। এই রোগের চিকিৎসা থাকলেও উগান্ডার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তা পাওয়া অনেক কঠিন।
দেশটির রাজধানী কাম্পালার মুলাগো হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট চার্লস কিগগুন্ডু ডেইলি মনিটরকে বলেছেন, মরিয়মের সমস্যাটি সম্ভবত বংশগত। তিনি বলেন, এটি একটি জেনেটিক সমস্যা। এই সমস্যার কারণে একজন নারীর ডিম্বাশয়ে এক চক্রে একাধিক ডিম্বাণু ছড়িয়ে যায়। যা উল্লেখযোগ্যভাবে একাধিক সন্তান জন্মের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
মরিয়মের বর্তমান বয়স ৪৩ বছর। তিনি বলেন, শেষ সন্তান জন্মের পরপরই তিন বছর আগে আর সন্তানধারণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাকে। উগান্ডার এই নারী বলেন, চিকিৎসক তাকে বলেছিলেন যে, তিনি ভেতর থেকে আমার জরায়ু কেটে ফেলেছেন।
মরিয়মের ছয় সন্তান পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। এক সময় স্বামী সব অর্থ-কড়ি নিয়ে তাকে ফেলে রেখে যান। চলচ্চিত্র নির্মাতা জো হাত্তাবের সাথে একজন অনুবাদকের মাধ্যমে কথা বলছেন মরিয়ম। তিনি বলেন, এটি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ যে তিনি আমাকে (এত বেশি) সন্তান দিয়েছেন। মরিয়মের অধিক সন্তান জন্মদানের এই গল্প অত্যন্ত দুঃখের। তিনি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মা তাকে বিক্রি করে দেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য হন তিনি।
মরিয়ম বলেন, চিকিৎসকরা তাকে বলেছিলেন, তিনি অত্যন্ত উর্বর এবং ডিম্বাশয়ে উর্বরতার মাত্রা হ্রাস করার জন্য সন্তান জন্মদান অব্যাহত রাখতে হবে। তার শরীরে কোনও পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিই কাজ করবে না। তার শরীর স্বাভাবিক রাখার একমাত্র উপায় সন্তান জন্মদান চালিয়ে যাওয়া। মার্কিন বেসরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা মায়ো ক্লিনিকের মতে, গুরুতর ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন উপসর্গ একেবারে অস্বাভাবিক। এটি জীবনের জন্য হুমকি হয়েও উঠতে পারে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.
