কম পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করা সত্যিই সম্ভব। তার জন্য প্রয়োজন দক্ষতা, উদ্ভাবনী, সৃজনশক্তি আর অধ্যাবসায়।
১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার ক্ষেত্র। যেহেতু এই সব ব্যবসায় বিনিয়োগ কম তাই বাস্তবে আপনি বিক্রি করবেন আপনার দক্ষতা আর শ্রম।
আর তাই ব্যবসার ক্ষেত্রটিতে আপনার যথেষ্ট দক্ষতা না থাকলে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশিই বিষয়টি সম্পর্কে আপনার আগ্রহ থাকা জরুরি। জেনে নিন এমন ২৫ টি বিজনেস আইডিয়া যা আপনি শুরু করতে পারবেন ১০ হাজার বা তার থেকেও কম পুঁজিতে।
১. অনলাইন শিক্ষকতা:
অনলাইনে আপনার পছন্দের বিষয়টি শিখিয়ে ঘরে বসেই ভাল রকমের আয় করা সম্ভব। বিষয়টি হতে পারে পড়াশোনা, বাদ্যযন্ত্র বা ভাষা শিক্ষা। আপনার দক্ষতা ও আগ্রহের ভিত্তিতে নির্ধারণ করুন বিষয়। নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলে বিনা বিনিয়োগেই আয় করতে পারবেন।
এছাড়াও রয়েছে অনলাইন শিক্ষকতার বিভিন্ন পোর্টাল, যেখানে নাম নথিভুক্ত করে সহজেই শুরু করতে পারবেন শিক্ষকতা। সেক্ষেত্রে নিতে হবে না ভিয়্যু বাড়ানোর দায়িত্ব। রয়েছে ইউডেমি-এর মতো অনলাইন টিচিং ও লার্নিংমার্কেট প্লেসও।
এই ধরণের প্ল্যাটফর্মে কোর্স আপলোড করেও শুরু করতে পারেন আপনার ব্যবসা। অঙ্ক, বিজ্ঞান, ভাষা শিক্ষার পাশাপাশিই আঁকা, প্রোগ্রামিং, বাদ্যযন্ত্র বাজানো, মার্কেটিং, ফটোগ্রাফি, ব্যবসা ইত্যাদি নানা বিষয়ে কোর্স আপলোড করার সুযোগ রয়েছে এই ধরণের প্ল্যাটফর্মে। টেক্সট, ভিডিও, অডিও বা প্রেজেন্টেশনের আকারে আপলোড করতে পারেন কোর্স।
২. খাবারের হোম ডেলিভারি:
আজকের কর্মব্যস্ততার যুগে বাড়িতে রোজ রান্না করার সুযোগ হয় না অনেকেরই, আবার প্রতিদিন হোটেলের খাবারও খেতে চান না বেশিরভাগ। এই চাহিদা মেটাতেই শুরু হয়েছিল খাবারের হোম ডেলিভারির ব্যবসা। নিজের বাড়িতে রান্না করে পৌঁছে দিন বাড়ি বাড়ি, সময়ে মতো সুস্বাদু খাবার দিতে পারলে ব্যবসার অভাব হবে না।
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন অঞ্চলে ব্যবসার সুযোগ বেশি। শহরের বাইরে থেকে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই রোজকার রান্না করতে চান না, সেক্ষেত্রে তাঁরা নির্ভর করেন হোম ডেলিভারির ওপর। এছাড়া অনেক ছোট পরিবারও রোজকার খাবারের জন্য হোমডেলিভারির খাবারের ওপরই নির্ভর করেন। ১০হাজার টাকায় শুরু করুন এই ব্যবসা।
৩. অনলাইন বেকারি:
রকমারি কেক, কুকিস্ বানাতে ভালবাসেন? আত্মীয়-বন্ধুদের জন্মদিন-অ্যানিভারসারিতে আপনার বানানো কেকের কদর রয়েছে? তাহলে এই ছোট ব্যবসা আপনার জন্য। ওভেন-ফ্রেশ বেকারি আইটেমের চাহিদা প্রচুর, আর তা যদি আপনি একেবারে ক্রেতার ঘরে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই। নিত্যনতুন রেসিপি চেষ্টা করুন, তৈরি করুন আপনার স্পেসালিটি। ১০ হাজার টাকায় শুরু করুন আপনার ব্যবসা। ঘরের ওভেনেই কেক-কুকিস্ বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করুন।
৪. ফলের রসের কিয়স্ক:
প্রথমেই বেছে নিতে হবে জায়গা। এমন জায়গায় কিয়স্ক করতে হবে যাতে সহজেই চোখে পড়ে। আসে পাশে অফিস, স্কুল, কলেজ থাকলে বিক্রি হওয়ার সুযোগ বেশি। ওই জায়গায় কিয়স্ক বসানোর অনুমতি পত্র যোগাড় করতে হবে, ভাড়া নিতে হবে জায়গা। এর পর দরকার কাঁচামাল আর ফলের রস তৈরির যন্ত্র। গোটাটাই ১০ হাজার টাকার কমে করে ফেলা সম্ভব।
৫. ট্রাভেল এজেন্সি:
অল্প পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করতে হলে বাসের টিকিট বুকিংয়ের ব্যবসার কথা ভাবতে পারেন। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। স্বল্প মূলধনে ব্যবসা করতে চাইলে সব থেকে সহজ উপায় হল হোস্ট এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ভর করে হোস্ট এজেন্সির উপর কিন্তু তা ১০ হাজার টাকার মধ্যে রাখা সম্ভব।
৬. ট্যুর গাইড:
বাঙালী বেড়াতে যেতে ভালবাসে। আর তার জন্য তারা অনেক সময়েই নির্ভর করে ট্যুর গাইডের ওপর। ফ্লাইট, ট্রেনের টিকিট বুকিং, হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ট্যুরটি প্ল্যান করা পুরোটার দায়িত্ব আপনার। অফিস, স্কুল বা কলেজের ট্যুর করাতে পারলে নিয়মিত ব্যবসা পাওয়া সম্ভব।
এটি কম খরচে লাভের ব্যবসা। আপনাকে শুধু একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, আর যোগাযোগ তৈরি করতে হবে বিভিন্ন জায়গার হোটেলের সঙ্গে, জেনে নিতে হবে তাদের ট্র্যাভেল এজেন্ট কমিশনের রেট। খুঁজে বের করুন নতুন নতুন জায়গা। বর্তমানে সব থেকে লাভজনক ব্যবসার একটি ট্যুর অপারেটিংয়ের ব্যবসা।
৭. কাস্টমাইজড গয়না তৈরি:
নতুন ধরণের গয়না তৈরি করুন, অভিনবত্ব আনুন গয়নার ডিজাইন, স্টাইল আর উপকরণে। অনলাইনে ব্যবসা করুন। ১০ হাজার টাকায় এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এই ধরণের গয়না তৈরির উপকরণ সহজেই পাওয়া যায় কলকাতার বিভিন্ন বাজারে। পছন্দ মতো উপকরণ সংগ্রহ করে বাড়িতে বসে সহজেই বানিয়ে ফেলুন গয়না।
৮. অনলাইনে হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি: দেশে রয়েছে হস্তশিল্পের বিপুল সম্ভার। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে ছোট ছোট ঘর সাজানোর সামগ্রী সংগ্রহ করুন, অথবা ছোট গয়না। গ্রামীণ শিল্পীরা অনেক কম দামেই বিক্রি করেন তাঁদের তৈরি সামগ্রী। তাই অত্যন্ত কম খরচে লাভের ব্যবসা করা সম্ভব।
৯. দর্জির দোকান: ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে হলে ভাবতে পারেন দর্জির দোকানের কথা। তবে এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই থাকতে হবে উপযুক্ত দক্ষতা ও সৃজনশীলতা। নিজের বাড়ি থেকেও এই ব্যবসা করতে পারেন। ক্রেতার বাড়ি গিয়ে ডিজাইন আর মাপ নিয়ে এসে বাড়িতে বসে বানিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসুন ক্রেতার বাড়িতে। অনলাইনে বহু নতুন নতুন অভিনব ডিজাইন পাওয়া যায়, সেখান থেকে নিজের পছন্দ মতো ক্যাটালগ তৈরি করে নিন।
১০. বিউটিশিয়ান: উপযুক্ত দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ থাকলে অল্প পুঁজিতে এই ব্যবসা করা সম্ভব। প্রথমেই কিনে ফেলুন প্রাথমিক পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ। বাড়িতে গিয়ে ফেসিয়াল, পেডিকিওর, ম্যানিকিওর, অয়েল ম্যাসাজ বা ওয়্যাক্সিংয়ের মতো পরিষেবা দিন ক্রেতাকে। অনেকে বিউটি পার্লারে না গিয়ে বাড়িতেই এই সমস্ত পরিষেবা পেতে পছন্দ করেন। পরিষেবার মান ভাল হলে লোক মুখেই প্রচার হবে। তৈরি করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইটও। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
১১. মেকআপ আর্টিস্ট: আপনি যদি সাজাতে ভালবাসেন, যদি থাকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, তাহলে খুব সহজেই অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব। কনে সাজানো থেকে পার্টি মেকআপ অথবা নাচ বা অন্যান্য অনুষ্ঠান, ডাক পেতে পারেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। এক্ষেত্রেও একটি ওয়েবসাইট থাকলে ক্রেতার কাছে পৌঁছনো সহজ হবে।
১২. নাচ, গান বা আঁকার স্কুল: আপনার যদি এর মধ্যে কোনও একটি দক্ষতা থাকে তাহলে সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে প্রায় বিনিয়োগ ছাড়াই আয় করতে পারবেন। আপনার বাড়িতেই এই স্কুল খুলতে পারেন, বা ভাড়া করতে পারেন কোনও ঘর। ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি গিয়েও শেখাতে পারেন গান, নাচ বা আঁকা। এর জন্য আপনাকে হতে হবে ধৈর্যশীল আর দায়িত্ববান। এই ব্যবসার প্রচার মূলতঃ হয় লোকমুখে। তাই আপনি যদি ছাত্রছাত্রীদের খুশি করতে পারেন তাহলে তাদের থেকে শুনেই নতুন ছাত্রছাত্রী আসবে।
১৩. বিদেশী ভাষা শিক্ষা: আপনার যদি কোনও বিদেশী ভাষা জানা থাকে, তাহলে সেই দক্ষতা ব্যবহার করে সহজেই লাভজনক ব্যবসা করতে পারবেন। ছোট থেকে বয়স্ক, বিভিন্ন বয়সের ছাত্রছাত্রী পাওয়া সম্ভব। বিনা বিনিয়োগে আয় করতে পারবেন এই ব্যবসায়। তবে এই ব্যবসা করতে সংশ্লিষ্ট ভাষায় আপনাকে যথেষ্ট দক্ষ হতে হবে নিশ্চিতভাবেই, হতে হবে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ও ধৈর্যশীল।
১৪. ফ্রিল্যান্স কন্টেন্ট রাইটিং: ইংরেজিভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা থাকলে কন্টেন্ট রাইটিংয়ের কাজ পাওয়া সহজ। ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসা করে আয়ও হবে ভালই। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স সাইটের মাধ্যমে এই কাজ পাওয়া যেতে পারে। ইদানিং আঞ্চলিক ভাষায়ও কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এই লেখার নিজস্ব কিছু কৌশল রয়েছে, যেমন সার্চ ইঞ্জিনে যাতে আপনার লেখা ওপরের দিকে স্থান পায় তার জন্য জানতে হয় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কৌশল। তবে চর্চা করলে রপ্ত করে নেওয়া কঠিন হবেনা। ভাষার ও শব্দভাণ্ডারের ওপর দখল থাকাই এই ব্যবসায় সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। বিনা বিনিয়োগে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন এই ব্যবসায়।
১৫. ইউটিউব চ্যানেল: অনলাইনে আয় করার আরও একটি সহজ উপায় ইউটিউব চ্যানেল। শিক্ষামূলক থেকে রান্না শেখানো, লাইফ হ্যাকস্ থেকে বেড়ানো, বিষয় হতে পারে যে কোনও। চ্যানেলের ফলোয়ার বাড়াতে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে। স্মার্টফোনে ভিডিও তুলেও আপলোড করতে পারেন চ্যানেলে। তবে শব্দ ও ছবির গুণমান ভাল হওয়া জরুরি। ভিডিওর যথেষ্ট ভিয়্যু হলে বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা পাবেন।
১৬. অনুবাদের ব্যবসা: দুটি বা তার বেশি ভাষা জানা থাকলে অনুবাদের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পৃথিবীজুড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের অনুবাদের প্রয়োজন পড়ে, তা হতে পারে আইনি কাগজ বা মেডিক্যাল নথি, অথবা মোবাইল অ্যাপ বা গেমিং। এছাড়াও পাওয়া যায় সিনেমা বা টিভি সিরিজের সাবটাইটেল অনুবাদ করার কাজ। প্রতিটির জন্য নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা থাকা প্রয়োজন, প্রয়োজন সেই বিষয়ের শব্দ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান। ঘরে বসে ইন্টারনেটে ব্যবসা করে আয় হবে ভালই। অনুবাদ এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে নিয়মিত কাজ পাওয়া যাবে।
১৭. গ্রাফিক ডিজাইনিং: বলা হয় পূর্ণ সময়ের চাকরির চেয়ে নিজের ব্যবসায় আয় বেশি করেন গ্রাফিক ডিজাইনাররা। কম্পিউটার আর প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার থাকলে ১০,০০০ টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। বস্তুতঃ আলাদা কোনও অফিসেরও প্রয়োজন নেই, ব্যবসা করতে পারেন ঘরে বসেই। অর্ডার পেতে পারেন অনলাইনে অথবা চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যাদের নিয়মিত গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের কাজের প্রয়োজন। আজকের ডিজিটাল যুগে গ্রাফিক ডিজানিংয়ের কাজের সুযোগ প্রচুর।
১৮. ওয়েডিং প্ল্যানার: বিয়েবাড়ি ভাড়া করা থেকে ডেকরেশন, খাওয়া দাওয়া থেকে বিয়ের কার্ড ছাপান, কনের সাজ থেকে ফটোগ্রাফি বিয়ের ঝক্কি অনেক। আজকের ছোট পরিবার আর ব্যস্ততার যুগে এই সব কাজ সুষ্ঠভাবে করার লোক কমে আসছে। অথচ এই বিশেষ দিনটির জাঁকজমক নিয়ে আপস করতে চান না কেউই, আর তাই বাড়ছে ওয়েডিং প্ল্যানারদের চাহিদা। বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে অন্যতম এই ব্যবসা। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। প্রয়োজন একটা আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট আর যোগাযোগ।
১৯. অনলাইনে বাংলা বই বিক্রি: আপনার যদি বাংলা সাহিত্য নিয়ে যথেষ্ট জানাবোঝা থাকে তাহলে ১০ হাজার টাকায় এই ব্যবসার কথা ভাবতে পারেন। অ্যামজন ফ্লিপকার্টের সৌজন্যে ইংরেজি ও মূলধারার অনেক বই অনলাইনে পাওয়া গেলেও বাংলা বইয়ের ক্ষেত্রে এ সুযোগ এখনও কম। বিশেষতঃ পুরনো বা দুষ্প্রাপ্য বাংলা বই অনলাইনে পাওয়াই যায় না।
অথচ কলেজস্ট্রিট এলাকাতেই খুঁজলে বহু এরকম দুষ্প্রাপ্য বাংলা বইয়ের সন্ধান মেলে। নতুন ছোট প্রকাশকদের বইও রাখতে পারেন আপনার সংগ্রহে। কলেজস্ট্রিট যদি আপনার নখদর্পণে হয় এই ব্যবসা আপনার জন্য। নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ফেসবুকের মাধ্যমে এই ব্যবসা করতে পারেন। অর্ডার অনুযায়ী ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দিন বই। প্রচুর বই কিনে ব্যবসা শুরুর দরকার নেই। অর্ডার এলে বই সংগ্রহ করে পৌঁছে দিন ক্রেতার হাতে।
২০. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট: ছোট বড় সব সংস্থার জন্যই সামাজিক মাধ্যমে উপস্থিতি প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে উঠছে। নিজেদের পরিষেবা বা পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া ও ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে প্রায় সব কোম্পানিই। খরচও হয় কম। বড় কোম্পানিদের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য নিজস্ব কর্মী থাকলেও ছোট কোম্পানি বা স্টার্টআপ-রা বেশিরভাগই বাইরের সংস্থাকে দিয়ে থাকে এই কাজের দায়িত্ব। বিনা বিনিয়োগে ঘরে বসে আয় করতে পারেন এই উপায়ে।
২১. মিনারেল ওয়াটারের ব্যবসা: কম টাকায় লাভজনক ব্যবসা করতে হলে বাড়িতে বাড়িতে মিনারেল ওয়াটারের ড্রাম পৌঁছে দেওয়া একটা সহজ উপায়। ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। শহরাঞ্চল ও শহরতলিতে বহু পরিবারই পানির জন্য নির্ভর করে এই পানি বিক্রেতাদের ওপর। এই কাজ পরিশ্রমসাধ্য, ভ্যানে করে পানির ড্রাম টেনে নিয়ে যেতে হয় এ পাড়া থেকে ও পাড়া।
২২. মোবাইল রিচার্জের দোকান: অনলাইন রিচার্জের যুগেও বেশিরভার উপভোক্তাই এখনও স্থানীয় দোকানে গিয়ে মোবাইল রিচার্জ করতেই বেশি সচ্ছন্দ, তাই পাড়ায় একটি ছোট দোকান ঘর ভাড়া করে কম খরচে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা। নেটওয়ার্ক প্রোভাইডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে, জেনে নিতে হবে কমিশন রেট। বাজারে দোকান না কিনে পাড়ার ছোট দোকার ঘর ভাড়া নিলে ১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু সম্ভব।
২৩. টিফিন ডেলিভারি: খাবারের হোম ডেলিভারির মতোই আরেকটি লাভজনক ব্যবসা টিফিন ডেলিভারি। পরিবারের সকলকেই যখন কাজে বেরোতে হয়, অফিসে যাওয়ার আগে টিফিন তৈরি করে নিয়ে যাওয়া প্রায় কারোও পক্ষেই সম্ভব হয় না। আর তাই আপনি যদি উন্নত গুণমানের ঘরে তৈরি খাবার পৌঁছে দিতে পারেন অফিসে তাহলে বিক্রি হবে ভালই। খাবার পৌঁছতে হবে অফিস এলাকায়, তার জন্য লোক রাখতে পারেন। ১০ হাজারা টাকায় ব্যবসা শুরু করে লাভের মুখ দেখুন প্রথম মাসেই।
২৪. চায়ের দোকান: চায়ের দোকান খুলতে ভাড়া করতে হবে একটা ছোট দোকান ঘর বা স্টল বসানোর জায়গা, কিনতে হবে কিছু বেঞ্চ আর টেবিল। ১০ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যাবে পুরোটাই। আর পাঁচটা চায়ের দোকানের থেকে খানিক আলাদা ভাবে সাজিয়ে নিন আপনার দোকান। দেওয়ালে ছবি আঁকাতে পারেন, বা টেবিল-বেঞ্চের রঙে আনতে পারেন নতুনত্ব। দোকানের অন্দরসজ্জাই এক্ষেত্রে হবে প্রধান। পাশাপাশি ভাল মানের চা যদি কম দামে বিক্রি করতে পারেন ব্যবসা বাড়বে। সঙ্গে মুখরোচক কিছু স্ন্যাক্সের ব্যবস্থাও রাখতে পারেন।
২৫. ফুড ভ্যান: ছোট ফুড ভ্যানে করে খাবার বিক্রি করলে ১০হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। রাখতে পারেন রোল-চাউমিন অথবা বার্গার-স্যান্ডউইচের মতো খাবার। নতুন ধরণের খাবারও চেষ্টা করতে পারেন। খাবার সুস্বাদু হওয়া জরুরি। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারলে বিক্রি ভাল হবে। অফিস এলাকায় বিক্রি বেশি হওয়া সম্ভাবনা বেশি।
১০ হাজার টাকায় ব্যবসার উপায় আছে অনেক, আপনাকে বুঝতে হবে বাজারের চাহিদা আর চিহ্নিত করতে হবে নিজের দক্ষতা আর আগ্রহ। এই ছোট ব্যবসায় আপনার দক্ষতা আর উদ্ভাবনী শক্তিই আপনার পুঁজি। সেই পুঁজিকে কাজে লাগিয়েই শুরু করতে পারেন ব্যবসা। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়বে আয়। তথ্যসূত্র : ইন্টানেট।