সিঙ্গাপুর থেকে ইউরোপে ট্রেন যাবে পদ্মা সেতু হয়েই। দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গেও যুক্ত করবে এই সেতু। আর এ নেটওয়ার্ক চালু হলে ভারত, ভুটান ও নেপালে সরাসরি যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের দুয়ার খুলবে।
অবিস্মরণীয় এক স্বপ্নজয়ের নাম পদ্মা সেতু। শুধু বাংলাদেশ নয়, সড়ক বা রেলপথে বিশ্বভ্রমণের স্বপ্নপূরণে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিলো এই সেতু। সেতুর দুই পাড়ে চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা মিলেছে আগেই। এটি মোংলা ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে যুক্ত করবে। যুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে। ঢাকা, বেনাপোল ও তামাবিল হয়ে ভারত-পাকিস্তান-আফগানস্তান যাওয়া যাবে এ সড়ক ধরে।
ট্রান্স এশিয়ান রেল লাইনের জন্যও বড় সম্ভাবনা নিয়ে আসছে পদ্মা সেতু। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে দরকার ১৬৯ কিলোমাটার রেলপথ। সে কাজও চলছে। এরই মধ্যে গেন্ডারিয়া, মাওয়া, জাজিরা, ভাঙ্গা রুটের কাজ প্রায় শেষ। বুড়িগঙ্গা-ধলেশ্বরীর ওপর ১৭ কিলোমিটার রেল ব্রিজ নির্মাণ হলেই ট্রান্স এশিয়ান রেলে যুক্ত হবে এই সেতু। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ঘটবে এশিয়া ও ইউরোপে।
ঢাকা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, নড়াইল, ফরিদপুর, যশোর, বেনাপোল- উত্তরে চিলাহাটি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত যাবে এই পথ। যা ইস্তানবুল, তেহরান, ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকা-দিল্লিকে যুক্ত করবে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত হবে দুই মহাদেশের দুই দূরতম প্রান্ত। যা ঢাকাকে ছুঁয়ে যাবে। আর ইস্তাম্বুলকে যুক্ত করবে টোকিওর সঙ্গে।
ট্রান্স এশিয়ান নেটওয়ার্কে যখন সিঙ্গাপুর থেকে ইউরোপে ট্রেন যাবে, তখন পদ্মাসেতু হয়ে ১৬০ কিলোমিটার গতিতে যাবে এই পথ ধরে। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতেও এত দ্রুত গতিতে কোনো সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলে না। পণ্য-যাত্রী নিয়ে ছুটবে এই ট্রেন, তাই সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে হেভি লোডেড সেতু ও রেলপথ বানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের পরামর্শেই এ কাজে হাত দিয়েছিল বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এক শতাংশ অবদান রাখবে পদ্মা সেতুর এই রেল সংযোগ।