স্বামী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে কঠিন ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন তার দুই স্ত্রী।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার (১ নং ওয়ার্ডের) সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ওই দুই সতিন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
ভোটের লড়াইয়ে একে অপরের মুখোমুখি হওয়া দুই সতিন হলেন- আনোয়ারা বেগম ও সুরমী আক্তার সুমি। সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আলা-উদ্দীন আলালের স্ত্রী তারা।
আলালের বড় স্ত্রী আনোয়ারা লড়ছেন তালা প্রতীক নিয়ে। আর ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমি লড়ছেন অটোরিকশা প্রতীকে। তবে ওই আসনটিতে তারা দুজন ছাড়াও দুই পুরুষ প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- জুয়েল মিয়া ও মো. আব্দুল করিম।
দুর্গাপুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা উল্লিখিত চারজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আলা-উদ্দীন আলালের ব্যবসায়িক সহযোগী ধনেশ পত্রনবীশ নিশ্চিত করেছেন, আনোয়ারা ও সুমি দুজনই মেয়র আলালের স্ত্রী।
ধনেশ পত্রনবীশ জানান, আলা-উদ্দীন আলাল বেশকিছুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ। মারাত্মক শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকার শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একই পদে আলালের দুই স্ত্রীর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ধনেশ বলেন, ‘ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমির প্রতি আলাল সাহেবের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু বড় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে অনেক মানা করেও তিনি ফেরাতে পারেননি। এর পেছনে কিছু লোকের ইন্ধন রয়েছে।’
ধনেশ আরও বলেন, ‘দুই স্ত্রীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে আলাল আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি খুবই বিব্রত।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সতিন হওয়ায় আনোয়ারা ও সুমির মধ্যে অনেক আগে থেকেই সম্পর্কের বৈরিতা রয়েছে। দুর্গাপুরের আত্রাখালি এলাকায় আলাদা বাসায় বসবাস করেন আনোয়ারা। আর সুমি বসবাস করেন আলালের সঙ্গে তার তেরিবাজার এলাকার বাসায়।
দুজনের নির্বাচনি পোস্টারে দেখা গেছে, আনোয়ারা বেগম তার পোস্টারে স্বামীর নাম ও পরিচয় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সুরমী আক্তার সুমি এসব কিছুই উল্লেখ করেননি।
আলা-উদ্দীন আলাল অসুস্থ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ছোট স্ত্রী সুরমী আক্তার সুমি মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার স্বামী অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছিলেন। তা ছাড়া পারিবারিক সিদ্ধান্তেই আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। কিন্তু আলালের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আনোয়ারা বেগমকে প্রার্থী করেছে। যে স্বামীর ভালো চায় না তার বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
সুমি আরও বলেন, ‘আমি ১৯ দিন ধরে স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। এ মুহূর্তে তার সুস্থতাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়। আর ওদিকে আমার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সব আত্মীয়-স্বজন ও পৌর পরিষদের কাউন্সিলরা আমার পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। ভোটারাও আমার সম্পর্কে এবং আলালের সিদ্ধান্তের কথা জানেন। আশা করি তারা আমাকে নির্বাচিত করবেন।’
এদিকে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আলাল তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। আর আমি আলাদা থাকি। ওই মহিলা যা বলেন তিনি তাই করেন। তার স্ত্রী হিসেবে আমিও দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আমি যখনই কোনো পদ-পদবিতে যেতে চাই তখনই অপর পক্ষ থেকে বাধা আসে।’
তিনি আরও বলেন ‘আমারও কিছু কর্মী-সমর্থক আছেন। তারা আমাকে জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দেখতে চান। তাই তাদের সমর্থনে আমি প্রার্থী হয়েছি।’
আগামী ১৭ অক্টোবর সারা দেশে একযোগে জেলা পরিষদের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
Priyo Bangla 24 – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Priyo Bangla 24 Offers To Know Latest National And Local Stories.