রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে ৩৭ কেজি ওজনের বিপন্ন প্রজাতির একটি বাঘাইর মাছ ৪৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ফেরি ঘাট থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার ভাটিতে বাহির চর কলার বাগান এলাকায় মাছটি ধরা পড়ে। পরে ঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্যা বাঘাইরটি ৪৫ হাজার টাকায় কিনে ৪৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। যদিও বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০২২-এর তফসিল অনুযায়ী, বাঘাইর বিপন্ন প্রজাতির মাছ। তাই এর শিকার ও বেচাকেনা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, মঙ্গলবার সকালে জাল ফেলে মাছটি ধরেন বাহির চর এলাকার জেলে অচেল হালদার। পরে তিনি মাছটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাট মাছ বাজারের আসেন। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্যা ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বাঘাইর মাছটি কিনে নেন। পরে মাছটি ওজন দিয়ে দেখতে পান প্রায় ৩৭ কেজি ৬০০ গ্রাম হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ মোল্যা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে বড় বাঘাইর বিক্রির খবর পেয়ে নিলামে অংশ নেই। প্রায় সাড়ে ৩৭ কেজি ওজনের বাঘাইর মাছটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৪৪ হাজার ৪০০ হাজার টাকায় কিনেন। মাছটি ফেরির পন্টুনের সাথে রশি দিয়ে বেধে রাখেন। বাঘাইরটি বিক্রির জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন পরিচিত জনদের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে কেজি প্রতি ১০০ টাকা করে লাভে ঢাকার এক পরিচিত ব্যবসায়ীর কাছে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে প্রায় ৪৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। মাছটি বুধবার সকালে ঢাকায় পাঠানোর কথা রয়েছে। বন্য প্রাণী (সংলক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী বাঘাইর মাছ একটি সংরক্ষিত বন্য প্রাণী।
বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, বাঘাইর মাছ তফসিলভুক্ত সংরক্ষিত বন্য প্রাণী। আইন অনুযায়ী বাঘাইর শিকার, ক্রয় এবং বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী বাঘাইর মাছ মহাবিপন্ন প্রাণী।
গোয়ালন্দ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল-রাজিব বলেন, বাঘাইর মাছ সংরক্ষিত বন্য প্রাণী আইনে চলে গেছে। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে না থাকায় তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। তার জানা মতে বাঘাইর শিকার, ক্রয়-বিক্রয় বা খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিধি নিষেধ নেই।