পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন অভিনেত্রী

নিজ দেশ পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী, গায়িকা আয়েশা ওমর। আদনান ফয়সাল সঞ্চালিত একটি পডকাস্টে হাজির হয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি।

এ অনুষ্ঠানে ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে কথা বলেন আয়েশা ওমর। এ সময় পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান এই অভিনেত্রী। জন্মভূমির প্রতি অনেক টান অনুভব করেন আয়েশা। পৃথিবীর কোনো জমি যদি তাকে বেছে নিতে বলা হয়, তবে পাকিস্তানের ভূমি তার কাছ সবচেয়ে প্রিয়। কিন্তু তারপরও কেন দেশ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন আয়েশা ওমর?

কারণ ব্যাখ্যা করে আয়েশা ওমর বলেন, ‘আমি এখানে (পাকিস্তান) নিরাপদ বোধ করছি না। আমি রাস্তায় একা হাঁটতে চাই; খোলা হাওয়ায় হাঁটতে পারা একজন মানুষের মৌলিক চাহিদা। এই যে আপনার অফিসে এত নারী রয়েছে, তারা কেউ রাস্তায় হাঁটতে পারে না। এটি কি দুঃখজনক নয়? আমি গাড়িতে বসতে চাই না; আমি সাইকেল চালাতে চাই; আমি কেন বাইক চালাতে পারব না?’

অন্য দেশের উদাহরণ টেনে আয়েশা ওমর বলেন, ‘পুরুষরা কেন বুঝতে পারে না পাকিস্তানি নারীরাও তাদের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারে। অপহরণ, ধর্ষণ বা ছিনতাইয়ের ভয় ছাড়া স্বাধীনভাবে রাস্তায় হাঁটতে পারি না। এমনকী, হেনস্তা ছাড়া এখানকার কোনো পার্কেও যেতে পারি না। নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা একজন মানুষের মৌলিকা চাহিদা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পৃথিবীর সব দেশেই ঘটে। কিন্তু সেখানকার মানুষ তো অন্তত নিরাপদে রাস্তায় চলতে পারেন। রাস্তায় চলতে গেলে ছেলেরা টিজ করবে, না হয় শরীরে স্পর্শ করবে— এটা কী?’

১৯৮১ সালে পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন আয়েশা ওমর। জন্মের এক বছর পরই বাবাকে হারান তিনি। আয়েশা ও তার ভাইকে সিঙ্গেল মাদার হিসেবে বড় করেছেন তার মা। পাকিস্তানের ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন আয়েশা ওমর।

মাত্র ৮ বছর বয়সে টেলিভিশ শো উপস্থাপনার মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে পা রাখেন আয়েশা ওমর। এরপর মডেলিং শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে টিভি ধারাবাহিকের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে। তেইশের অধিক জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি।

২০১১ সালে উর্দু সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় পা রাখেন আয়েশা ওমর। ২০১৭ সালে ‘ইয়ালঘর’ সিনেমার মাধ্যমে নজর কাড়েন তিনি। এ পর্যন্ত ৯টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ৪২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী।