আরব্য ঐতিহ্যের নুকরা ঘোড়া। রূপকথার দূরন্ত এই প্রাণীটি এতদিন সিনেমা আর রেসের ময়দানে দেখা গেলেও এখন লালন-পালন হচ্ছে বাংলাদেশেই। সঙ্গে মারোয়ারি, সিন্ধিসহ বিভিন্ন জাতের ১০টি ঘোড়া নিয়ে খামার গড়েছেন ময়মনসিংহের এক সৌখিন যুবক। সিনেমার পর্দায় রাজকীয় ঐতিহ্য চিত্রায়ণে জুড়ি নেই নুকরা ঘোড়ার। নায়কোচিত স্বভাব আর রূপ-আভিজাত্যে দর্শকরা পায় বাড়তি বিনোদন। অনেক দেশের ধনীরা সৌখিনতার বসে বাড়িতে পালন করেন ইতিহাসিক এসব ঘোড়া।
ইসলামি খলিফা যুগের এসব প্রাচীন ঘোড়া এখন দেশেই লালন-পালন করছেন ময়মনসিংহের যুবক শরিফুল ইসলাম। জানান, ভারতের রাজস্থান, বিহার ও পাঞ্জাব থেকে আনা ১০টি ঘোড়া নিয়ে দুই বছর আগে যাত্রা শুরু তার এই খামারের। শরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ঘোড়ার মার্কেটে ব্যাপক সম্ভাবনা। আপার লেভের কাস্টমাররাই এ ঘোড়াগুলো কালেকশন করছে। মারওয়ারি ঘোড়াগুলো রানিং করার জন্য সেরা।
নিজ বাড়িতে গড়ে তোলা খামারের ঘোড়ার জন্য খাবার হিসেবে গম, ভূসি আর ঘাস দিলেই চলে। তবে, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন জটিলতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ এই খামারির।
শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন করতে পারছি না। ওই রুলসে ঘোড়া নেই। গরু আছে, ছাগল আছে, মুরগি আছে। কিন্তু আমি প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি কিন্তু এখানে ঘোড়ার কোনো অপশনই নাই। সরকার আমাদের সাহায্য করলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব। ইয়ংদের ঘোড়ার রাইডিং করার জন্য আগ্রহ প্রচুর।
এদিকে, ঘোড়ার খামার করতে কোনও বিধি-নিষেধ নেই বলে জানালেন প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তারা। ময়মনসিংহ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মনোরঞ্জন ধর বলেন, যদি কোনো উদ্যোক্তা ঘোড়া পালতে চায় এবং সে যদি খামার করতে চায় তাহলে তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করব। জেলা, উপজেলায় যেসকল ভেটেনারি চিকিৎসালয়গুলো রয়েছে সেখান থেকে আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ সাহায্য করব।
দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিদেশ থেকে ঘোড়া আমদানি করতে হয়। অথচ একটু উদ্যোগী হলে দেশেই উন্নত জাতের ঘোড়া উৎপাদন সম্ভব বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।