বালু চরেও মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা সম্ভব তা এই জেলার চাষিরা প্রমান করেছে। মিষ্টি কুমড়া চাষে সফল হয়ে চাষিরা অনেক খুশি। কম খরচে বেশি ফলন হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। ফলে অনেক চাষিরা মিষ্টি কুমড়া চাষে বেশি ঝুঁকছেন। লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ে বালু চরে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়ার।
তিস্তার নদীতে খরস্রোতার কারণে তৈরি হয় অসংখ্য বালু চর। চাষিরা এই বালু চরে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছেন। বালু চরে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা অনেক কষ্টদায়ক হলেও চাষিরা দুবেলা খাবারের তাগিদে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলাচ্ছে। এছাড়া এইখানে খিরা, তরমুজ, বাদাম চাষ হলেও মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা বেশি। এই ফসল চাষে খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা এই ফসল চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষিরা বলেন, মিষ্টি কুমড়া চাষের জন্য প্রথমে বালু চরে অনেক গুলো গর্ত করতে হয়। পরে বাহির থেকে আনা পলিমাটি ঐ গর্তে পূরণ করা হয়। পরবর্তীতে মাটির সাথে জৈব সার মিশ্রণ করে ৩-৪ টি করে কুমড়ার বীজ বপন করে হয়।
চারা রোপনের পর গাছ বড় হলে পানি সেচ আর পরিচর্যা করলে ফুল ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে প্রায় ৮/১০টি করে কুমড়া আসে। প্রতিটি কুমড়া ৩-৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। চাষিরা বর্ষা আসার আগেই মিষ্টি কুমড়া সংগ্রহ করে বিক্রি করা শুরু করে। প্রতি কুমড়া ক্ষেতেই ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের পাঙ্গাটারী গ্রামের কৃষক মছফুর আলী বলেন, আমার নিজের কোন জমি নেই। তিস্তা নদীর বুকে জেগে উঠা বালু চরে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে আমার সংসার চলে। চর গুলোতে হাজার মিষ্টি কুমড়ার চারা লাগিয়েছি। ক্ষেতে ফল আসতে শুরু করেছে। মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ করে এ ক্ষেত থেকে নুন্যতম ৪০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রির করতে পারবো বলে আশা করছি।
তিস্তা চরাঞ্চলের চাষি মজিবর রহমান বলেন, সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা প্রনোদনা দেন। কিন্তু চরাঞ্চলের চাষিরা তা পান না। এসব পরিত্যাক্ত বালু চরে সুযোগ পেলে ব্যাপক হারে চাষাবাদ করা যেত। যদি আগাম বন্যা না আসে তো ৪০-৫০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রির করেতে পারবো আশা করছি।