রাজশাহী নগরীর ব্যস্ততম এলাকা জিরো পায়েন্ট মসজিদের সামনে ডাব বিক্রি করছিলেন তিন ব্যবসায়ী। এ সময় আশরাফ আলী নামের এক ডাব ব্যবসায়ীকে এক ক্রেতা এসেই দুইটি ডাব কেটে ব্যাগে দিতে বলেন। ডাব বিক্রেতা ডাব কেটে ব্যাগে দিয়ে দেন। ডাব হাতে নিয়ে এবার ডাবের দাম কত দিতে হবে জানতে চান ঐ ক্রেতা। এবার দাম শুনে ‘থ’ মেরে যান ক্রেতা। মিডিয়াম সাইজের একটি ডাবের দাম চাওয়া হয় ১৪০ টাকা পিস।
00:00 / 00:00
এবার ব্যবসায়ী ও ঐ ক্রেতার মধ্যে শুরু হয় বাকযুদ্ধ। পরাস্ত হয়ে ক্রেতা একটি ডাব রেখে দিতে বলেন। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে ঐ ক্রেতা বলেন, ‘আমার নাম বলতে চাই না। তবে আমি এখানকারই বাসিন্দা। হঠাৎ করেই তীব্র গরমে পাতলা পায়খানা হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম ডাবের দাম ৬০-৭০ টাকা হবে। ১৪০ টাকা পিস ডাব! কি বলবো ভাষা হারিয়ে ভেলেছি। বাধ্য হয়ে একটা ডাব নিলাম। দুটো ডাব কেনার মতো অবস্থা নেই।’
এবার কথা হয় ডাব বিক্রেতা আশরাফ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের আগেও ডাবের এতো চাহিদা ছিল না। ঈদের পর গরমও অনেক পড়েছে। ডাবের চাহিদাও বেড়েছে। ১০০ টাকার উপরে ডাব কিনতেই হচ্ছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
00:00 / 00:00
তিনি আরো বলেন, আমার কাছে তিন কোয়ালিটির ডাব আছে ১৪০ টাকা, ১৩০ টাকা আর ১১০ টাকা। আরেক ডাব বিক্রেতা মনির হোসেন। তিনি জানান, বড় ডাব তিনি ১৫০ টাকা পিস, মাঝারিটা ১৩০-১৪০ টাকা আর ছোটটা ১১০-১২০ টাকা দামে বিক্রি করছেন।
চৈত্রের খরতাপে পুড়তে থাকা রাজশাহীতে হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ওষুধের পাশাপাশি ডাব খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসাকরা। কিন্তু ডাব কিনতে গিয়ে দিশেহারা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনেসহ নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অন্তত ১০ জন ডাব বিক্রেতাকে দেখা যায়। যাদের কেউ অস্থায়ী ভ্যানে আবার কেউ স্থায়ী দোকানেই ডাব বিক্রি করছেন।
বুধবার লক্ষ্মীপুর এলাকায় এক পিস ডাব ১৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। যেখানে রোগীর কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়েই বেশি দামে ডাব কিনছেন ক্রেতারা। তবে, এ বিষয়ে এখানকার খুচরা বিক্রেতারা প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।
একাধিক সূত্র বলছে, পাইকারি পর্যায়ে ডাবের দাম বৃদ্ধি পেলেও এতো অস্বাভাবিকভাবে বাড়েনি। পাইকারিতে ১০০ টাকার নিচে ডাব কেনাবেচা হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, সব জায়গায় দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়েছে। সুযোগ পেলেই ফায়দা লুটছে ব্যবসায়ীরা। নজরদারি না থাকায় যে যা খুশি তাই করছে। এ অবস্থার উত্তোরণ দরকার