ঢাকাই সিনেমার শুরু লগ্ন থেকেই অন্যতম সফল নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। তার রূপের আগুনে এক সময় বহু যুবকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। আট থেকে আশি, এমন কেউ নেই যে নায়িকার ওপর ক্রাশ খায়নি। তার ওপর ক্রাশ খেয়েছেন শোবিজ অঙ্গনেরও অনেকে। তাদের একজন টিভি সঞ্চালক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পূর্ণিমার জন্মদিন। দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন মাধ্যমে নায়িকাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তার ভক্ত-অনুরাগীরা। সেক্ষেত্রে পুর্ণিমার ওপর ক্রাশ খেয়েছিলেন যারা, তারা তো বিশেষভাবে পূর্ণিমাকে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে শাহরিয়ার নাজিম জয় বিশেষভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন পূর্ণিমাকে। যদিও ওই পোস্টে কোথাও শুভ জন্মদিন, বা জন্মদিন বিষয়ে সরাসরি কোনোকিছু উল্লেখ করা হয়নি। তবে নায়িকার এমন বিশেষ দিনে জয়ের এতটা আবেঘন পোস্ট পড়ে দেখার পর আর বুঝতে বাকি নেই যে পূর্ণিমার জন্মদিন উপলক্ষেই লিখেছেন জয়।
ওই পোস্টে একটি ছবি যোগ করেন জয়। ছবিতে দেখা যায় পূর্ণিমার হাতের সেলফিতে একইফ্রেমে বন্দি হয়েছেন জয় ও জায়েদ খান। ক্যাপশনে জয় নায়িকার সঙ্গের স্মৃতিগুলো তুলে ধরেন; তা হবহু তুলে ধরা হল- ‘ছবিটি আজ থেকে ৬ বছর আগে। পূর্ণিমা আর জায়েদ খান আসে আমার সেন্স অফ হিউমার অনুষ্ঠানে। এটিএন বাংলায় আলোড়ন জাগিয়েছিল যে অনুষ্ঠানটি। শ্যুটিং হত এফডিসির ফ্লোরে। পূর্ণিমার এই পর্বটি থেকেই দর্শক অনুষ্ঠানটি গ্রহণ করা শুরু করে। এর আগে কয়েকটি পর্ব বেশ ফ্লপ গিয়েছিল। জায়েদ খানের তখন কোন গুরুত্ব নেই। শুধুমাত্র শিল্পী সমিতির নেতার ইলেকশন এর দাঁড়াচ্ছিল। এতটুকুই তার আলোচনা।
মূলত সে তার প্রচারের জন্যই অনুষ্ঠানটিতে স্বেচ্ছায় এসেছিল। কিন্তু আমি একটা শর্ত জুড়ে দিয়েছিলাম পূর্ণিমাকে নিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেছিলেন ডান। সত্যিই নিয়ে আসলেন। শুধু তাই না পরবর্তীতে অনেক বড় বড় নায়িকা এবং শিল্পী আমি এই অনুষ্ঠানে আনতে পেরেছিলাম জায়েদ খানের কারণে। এখন তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আমারও দিন পাল্টেছে। পূর্ণিমা কে দেখিনা বহুদিন। পূর্ণিমার সাথে সম্পর্কটা আমার খুব বেশি জমে উঠে নাই আবার একদম হালকা ও না। বেশ কিছু শো করেছি। নাটকও করেছি। একবার সুযোগ হয়েছিল ১০ ঘণ্টা তার পাশে বসে লন্ডন থেকে ঢাকা ফেরার। প্লেনে উঠে বসেছি আমার এক পাশে মৌসুমী আপা, আরেক পাশে পূর্ণিমা। হঠাৎ প্লেনে মান্না ভাই এসে হাজির। ভাইয়ের সিট ছিল পিছনে। বললাম ভাই আপনি এখানে বসেন আমি আপনার সিটে যাই। এমন প্রস্তাবে কে না রাজি হয়? ১০ ঘণ্টা পূর্ণিমার পাশে বসার সুযোগটা আমার জীবনে আর হলো না। সামনে হবার সুযোগও খুব কম। পূর্ণিমা তোমাকে বলছি অজান্তেই তুমি আমার জীবনে যে অবদান রেখেছো তা আমি কখনোই ভুলতে পারবো না। আমার উপস্থাপনার এত দূর আসবার শুরুটা হত না সেদিন তোমার পর্বটা যদি হিট না হতো। আরেকটি কথা তুমি আমার ছোটবেলার ক্রাশ। আমি সেই ছোট্টবেলা থেকে তোমাকে সিনেমায় দেখি।’
জয়ের এই পোস্টের পর বেশ সাড়া দিতে থাকেন তার ভক্তরা। শেষের কথাটিকে ‘ইন্টারেস্টিং পার্ট’ উল্লেখ করে নেটিজেনরা বলেন, কৃতজ্ঞতাপূর্ণ সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন জয়। অর্থাৎ, শুধু জয় নয়, এখনকার সময়ের অনেক ভক্তরাও পূর্ণিমাকে মনে ধরে রেখেছেন বলে স্বীকার করেন নেটিজেনরা।
এ সময় জয়ের এই পোস্টটির মন্তব্যঘরে উত্তর দেন পূর্ণিমা। তিনিও জয়ের পোস্টে বেশ মজা পেয়েছেন। জয়কে সম্মানের সঙ্গে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পূর্ণিমা লিখেছেন, ‘শেষ এর দুই লাইন টা ভালো ছিলো, ভালো থাকবেন জয় ভাই।’
তবে জয়, পূর্ণিমা এবং জায়েদ খান- তারা তিনজন অভিনয় শিল্পী হলেও একসঙ্গে কখনোই বড় পর্দায় কাজ করেননি। যতবার এক ফ্রেমে তারা একত্র হয়েছেন, তা টেলিভিশন শো কিংবা সাক্ষাতকার ঘিরেই।