পুকুরে দুধ-লবণ-ডাব ঢালতেই ভেসে উঠল দেহ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিখোঁজের প্রায় ১৯ ঘণ্টা পরে সিদ্রাতুল মুনতাহা নামের আড়াই বছরের এক শিশুর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর সরদারপাড়ার হাকিম সরদারের পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মুনতাহা ওই এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। পরে খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে কুমারখালী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়ায় মর্গে পাঠান।

এদিকে শিশুটির স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, ওই পুকুরের পাশে তালগাছ আছে। সেখানে জলপরী ও জ্বিন বাস করে। মেয়েটিকে তারাই তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে।

তবে পুলিশ ও চিকিৎসক বলছেন, স্বজনদের দাবি অযৌক্তিক ও বিজ্ঞান সম্মত নয়।

শিশুটির চাচা মিরাজুল ইসলামের ভাষ্য, গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশপাশের পুকুর, প্রতিবেশী ও স্বজনদের বাড়িসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় জিডি করা হয়। এরপর বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক কবিরাজের কাছে গিয়েছিলেন শিশুর বাবা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কবিরাজের দেখানো পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।

লাশ উদ্ধারের প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রতিবেশী চাচা আতিয়ার রহমান বলেন, ওই জায়গায় রাতেও অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল। পাওয়া যায়নি। তবে দুপুরে শিশুর বাবা প্রথমে বুক সমান পানিতে নেমে অজু করেন। তারপর পানিতে দুধ ঢালেন, লবণ দেন। একটা ডাব ডুবিয়ে দেন। এরপর ডাবও ভেসে উঠল, লাশও ভাসল।

এলাকাবাসী জানান, শিশুটির বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ৫৫৫ নামক একটি ইটভাটা আছে। ভাটায় শিশুর বাবা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। প্রায় শিশুটি একা একা হেঁটে বাবার কার্যালয়ে যেতো। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাবার কাছে যাওয়ার সময় শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় জিডি করা হয়। এরপর বুধবার সকালে এক কবিরাজের কাছে গিয়েছিলেন শিশুটির বাবা। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কবিরাজের দেখানো পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়।

বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। পরে কবিরাজের দেখানো পুকুর থেকে এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী লাশ পেয়েছি। ওই পুকুরে জলপরী আছে। হয়তো আমি জলপরীর কোনো ক্ষতি করেছি। সেজন্য আমার মেয়েকে জলপরীই মেরেছে। আমার কোনো অভিযোগ নেই।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুর মা পিংকি খাতুন বলেন, প্রায় মেয়ে একা একা ওর বাবার অফিসে যেতো। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি। আমার কোনো শত্রু নেই। কেউ ওকে মারিনি। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিছে। কোনো অভিযোগও নেই।