এই কষ্ট চাপা দেওয়া যায় না মা : পূজা

মা হারানোর বেদনায় দারুণভাবে ভেঙে পড়েন চিত্রনায়িকা পূজা চেরি। আজ বিশ্ব মা দিবস। বিশেষ দিনটি তার এই ব্যথা যেন বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। কান্না আর স্মৃতির মেঘে ভেসে বেড়াচ্ছেন। প্রয়াত মা ঝর্ণা রায়কে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খোলা চিঠি লেখেছেন পূজা।

এ চিঠিতে পূজা চেরি বলেন, “মা, তোমাকে ছাড়া এখনো আমার জন্মদিন আসে। সারাদিন ধরে শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খায় মনে– এই তো মাত্র দুই বছর আগের জন্মদিনটা। তোমার শরীর তখন খুব একটা ভালো ছিল না। অথচ সেদিন আমি মন খারাপ করে তোমার সঙ্গে একটু উচ্চ স্বরে কথা বলেছিলাম। মনে পড়ে সেদিন বলেছিলাম, ‘সবার মা, তার মেয়ের জন্মদিনে কত কিছুই না করে, তুমি তো আমার জন্য পায়েসও বানাচ্ছো না!”

পরের ঘটনা বর্ণনা করে পূজা বলেন, “তুমি কষ্ট পেয়েছিলে কিনা জানি না, এরপর দেখলাম তুমি সেই দুর্বল শরীর নিয়ে আমার জন্য পায়েস রান্না করলে। যদিও ঠিকঠাক হয়নি, চাল আধা সেদ্ধ ছিল, দুধও জমেনি ভালো করে; তবু সেই পায়েসই আজ সবচেয়ে প্রিয় মনে হয়। কারণ তুমি নিজের হাতে বানিয়েছিলে, ভালোবাসা মিশিয়ে।”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে পূজা বলেন, “মা, জানো– এখনো আমার সেই একই পায়েস খেতে ইচ্ছে করছে, তোমার হাতের পায়েস! একা একা বসে থাকতে থাকতে কান্নায় চোখ ভরে যায়। কতদিন তোমাকে দেখি না, মা। জানি না, সৃষ্টিকর্তা আমাকে আর কতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন, কিন্তু যতদিন থাকি ততদিন কীভাবে এই বুকের কষ্ট চেপে রাখব? এটা তো আর সম্ভব না।”

পরপারে পাড়ি জমালেও মায়ের উপস্থিতি সবসময় অনুভব করেন পূজা। এ অভিনেত্রীর ভাষায়, “একটা কথা বলি মা, তুমি চলে যাওয়ার পর মনে হয় তুমি আমায় আবারো নতুন করে জন্ম দিয়েছো। এক নতুন পূজাকে। যে একা একাই লড়বে। আমি জানি, তুমি আমাকে দেখছ। অনুভব করি, তুমি এখনো আমার আশপাশেই আছো। তাই তো কোনো দুঃখ, কোনো বিপদ এখনো আমাকে ছুঁতে পারেনি।”

“তুমি কথা রেখেছো মা। এখন আমার পালা। তুমি দেখো, তোমাকে দেওয়া কথা আমি রাখব। যদিও পৃথিবীর চোখে তুমি নেই, আমার চোখে তুমি আছো। এই যে আমি এত কথা লিখছি, আমার মনে হচ্ছে তুমি আমার মাথায় হাত রেখে বসে আছো, হাসছো। আর বলছ– ‘পূজা, কেঁদো না মা, আমি তো আছি।” বলেন পূজা।

মায়ের প্রতি আবদার জানিয়ে পূজা বলেন, “একটা আবদার করব মা– এই জীবনে তুমি কখনো নিজের কথা ভাবোনি। সব সময় আমার চিন্তায় বিভোর ছিলে। তাই এবার ওপারে অন্তত নিজের খেয়াল রেখো, মা। ভালো থেকো, আমার লক্ষ্মী মামণি। অনেক ভালোবাসি মা।”