‘আমি তৃষ্ণার্ত’ কেন বললেন ফারিন খান

তরুণ প্রজন্মের অভিনেত্রী ফারিন খান। অল্প সময়ের ক্যারিয়ারের বেশ কিছু আলোচিত নাটকে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন। মডেলিং দিয়ে শোবিজ যাত্রা শুরু, এরপর সিনেমায় নাম লেখান। তবে এখন নাটকেই থিতু হয়েছেন। বর্তমানে ব্যস্ত রয়েছেন ঈদের কাজ নিয়ে। এসব বিষয়ে কথা বলেছেন যুগান্তরের সঙ্গে, সাক্ষাতকার নিয়েছেন রিয়েল তন্ময়।

এবার ঈদে আপনার অভিনীত কয়টি নাটক প্রকাশ হবে? 

আমি গতানুগতিক কাজ করি না। সে তুলনায় আমার কাজের সংখ্যা কম। বেছে বেছে গল্পনির্ভর প্রজেক্টে কাজ করি। সম্প্রতি শেষ করলাম ‘লাভ ইউ টিচার’ নামে একটি নাটকের কাজ। এতে আমার সহশিল্পী মুশফিক ফারহান। আমার সবগুলো নাটকেই তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে করা। এসব ঈদের জন্য নির্মিত। এখন দেখা যাক প্রকাশ হয় কয়টি। তবে ২/৩টি আসবে এটা আশা করি।

নতুনদের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেন না? 

নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করি। কারণ আমিও তো নতুন। অনেক বেশি সিনিয়রদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অস্বস্তিতে না ভুগে নতুনদের সঙ্গে স্বস্তিতে যদি কাজ করা যায়, সেটির অ্যাচিভমেন্ট অনেক বেশি।

নাচেও আপনি বেশ পারদর্শী, তবে এখন দেখা যায় না। অভিনয়ে মনোযোগ বাড়াতে গিয়ে কি নৃত্যচর্চা ছেড়ে দিচ্ছেন? 

নাচের প্রতি আমার যেমন দুর্বলতা রয়েছে, ঠিক তেমনি অভিনয়ের প্রতিও দুর্বলতা রয়েছে। দেশ-বিদেশের অনেক মঞ্চে আমি পারফর্ম করেছি। সেটি করে আমি আনন্দ ও মানষিক শান্তি পেয়েছি। তা কখনও ভুলতে পারব না। তবে এটি সত্যি, এখন আর নাচে আগের মতো সময় দিতে পারছি না। তারপরও নাচ থেকে দূরে সরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। অভিনয়ের পাশাপাশি এটিও আমার সঙ্গে থাকবে সবসময়।

অভিনয়ের আগে মডেল হিসাবে আপনি পরিচিতি পেয়েছেন। সেই যাত্রা প্রসঙ্গে একটু জানতে চাই… 

মডেল হব এরকম ভাবনা আমার ছিল না। এটি একমাত্র সম্ভব হয়েছে আমার বন্ধুদের জন্য। আমার উচ্চতা ৫ ফিট ৮ ইঞ্চি। এরজন্য বন্ধুরা প্রায়ই বলতো আমার নাকি র‌্যাম্প মডেল হিসাবে কাজ করা উচিত। তারা যে শুধু বলেই ক্ষান্ত হয়েছে তা নয়, আমাকে জোর করে ফটোশুট করিয়েছে। মডেলিংয়ের জন্য কোথায় যোগাযোগ করতে হবে, সেই রাস্তাও তারা দেখিয়েছে। তারপর একদিন সুযোগ হয় কাজ করার। কিন্তু ছয় মাসের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক কাজ করতে পারব এটি কখনোই ভাবিনি। দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া থেকে শুরু করে শুভেচ্ছাদূত হওয়ার অভিজ্ঞতাও আমার হয়েছে অল্পদিনেই।

অভিনয়ের শুরু সিনেমা দিয়ে, কিন্তু এখন নাটকেই আপনার ব্যস্ততা। সিনেমা কি আর করবেন না? 

সিনেমা আর করবো না, এমন কথা আমি বলতে চাই না। ২০১৭ সালে ‘ধ্যাত্তেরিকি’ সিনেমা দিয়ে আমার অভিষেক। তখন বয়স অনেক কম থাকায় অভিনয়ের অনেক কিছুই আত্মস্থ করতে পারিনি। ক্যামেরার সামনে অভিনয় করতে গিয়ে আমার সেটি উপলব্ধি হয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অভিনয় শিখেই বড় পর্দায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব।

এখন কি অভিনয়ে আপনি পারদর্শী হয়েছেন? 

এখনও আমি বলবে না যে, খুব পারদর্শী হয়ে গেছি। তবে এটি সত্যি, অভিনয়ের জন্য আমি তৃষ্ণার্ত, সেই তৃষ্ণা পরিণতশিল্পী হয়ে ওঠার। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে আমার উপলব্ধি এটাই, অভিনয় হলো জীবনের প্রতিচ্ছবি। ঘটনাবহুল নানা অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যে কাহিনির বিন্যাস, তা সুনিপুন অভিনয় দিয়েই বাস্তব করে তুলতে হয়। তাই প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কখনও অগ্রজ শিল্পী বা নির্মাতাদের কাছ থেকে, কখনও আশেপাশের মানুষ ও তাদের যাপিত জীবনকে দেখে।

আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে কোন কাজটিকে দেখেন?

এটা ঠিক যে আমরা জীবনে যা কিছু করি না কেন, তার জন্য দরকার একটা ব্রেক থ্রু। আমার ক্যারিয়ারে ‘ফিমেল-৩’ হলো সেই নাটক। যা আমাকে আলাদাভাবে দর্শকের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এর থেকে এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, চরিত্রের ব্যক্তি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার উপস্থাপন। সে কারণে অভিনয়ে গল্প, চরিত্র ও নির্মাতাকে প্রাধান্য দিচ্ছি।