অপু বিশ্বাস; এই এক নামেই সারাদেশজুড়ে পরিচিত তিনি। আর ভক্তদের কাছে তিনি ঢালিউড কুইন।গত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে তার মতো জনপ্রিয়তা দেশের কোনো নায়িকা পাননি।
ইতোমধ্যে শতাধিক সিনেমায় কাজ করেছেন অপু বিশ্বাস। যার মধ্যে সিংহভাগই ব্যবসায়িকভাবে সফল।চলচিত্রে নায়িকা হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অপু বিশ্বাসের পথচলা যেভাবে শুরু হয়েছিল, সেই পেছনের অজানা গল্পটা নিয়েই আজকের এ প্রতিবেদন।
অপু বিশ্বাসের জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা বগুড়ায়। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই সবার ছোট। সবার ছোট হওয়ার সুবাদে নানা আবদার-বায়না মিটিয়ে নিতেন সহজেই। অনলাইন দুনিয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অপুর আসল নাম হিসেবে রয়েছে অবন্তী বিশ্বাস। তথ্যটি সঠিক নয়। তার আসল নাম অপু বিশ্বাসই। আর এই নাম রেখেছিলেন তার দাদু। অন্যদিকে অবন্তী নামটি মূলত নির্মাতা সুভাষ দত্ত দিয়েছিলেন। এবং তিনিই আদর করে ওই নামেই ডাকতেন।
তৃতীয় শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় নাচ শেখা শুরু করেন অপু। স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোয় বরাবর মধ্যমণি ছিলেন তিনি। তখন ক্লাস নাইনে পড়েন অপু বিশ্বাস। কয়েকজন বান্ধবী জানাল, ঢাকায় লাক্স ফটোসুন্দরী নামে একটি প্রতিযোগিতা হচ্ছে। সেখানে ছবি পাঠানোর জন্য বান্ধবীদের সঙ্গে গিয়ে ছবি তুললেন অপু। পত্রিকায় পাওয়া ঠিকানা অনুসারে সেটা পাঠিয়েও দেন।
কয়েক দিন পরই অপুর কাছে চিঠি আসে। তাকে সেরা ২৫ জনের মধ্যে সিলেক্ট করা হয়েছে। প্রথমে খবরটি শুনে অপুর মা কিছুটা রেগে যান। পরে মেয়ের আগ্রহ দেখে মেনে নেন। এক পর্যায়ে অপু জায়গা পেয়ে যান সেরা দশে। কিন্তু হঠাৎ তার মা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে আর অংশ নিতে পারেননি।
অপু বিশ্বাস যখন ক্লাস টেনে উঠলেন, তখন দূঃসম্পর্কের এক মামা তাকে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, আমজাদ হোসেন একটি সিনেমা বানাচ্ছেন ‘কাল সকালে’ নামে। সেখানে নায়িকার বান্ধবীর চরিত্রের জন্য ওই মামার পরামর্শে যুক্ত হন অপু। সিনেমাটিতে নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন ফেরদৌস ও শাবনূর।
ওই সিনেমার কাজ সেরে অপু বিশ্বাস ফিরে যান বগুড়াতে। প্রস্তুতি নেন এসএসসি পরীক্ষার। ওই পরীক্ষার মাঝেই তার কাছে ফোন করেন নির্মাতা এফ আই মানিক। জানালেন, ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমায় তাকে নায়িকা করতে চান। তিনি উচ্ছ্বসিত হন প্রস্তাবটি পেয়ে। পরিবারকে মানিয়ে তিনি চলে আসেন ঢাকায়। অভিনয় করেন সিনেমাটিতে। আর ২০০৬ সালে প্রায় সাড়ে ৩০০ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে সিনেমাটি।
এরপরের গল্পটা কম-বেশি সবারই জানা। সুপারহিট সব সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডের শীর্ষ নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন অপু বিশ্বাস। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হলো- ‘চাচ্চু’, ‘দাদীমা’, ‘পিতার আসন’, ‘কাবিননামা’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’, ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’, ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’ ইত্যাদি।
ব্যক্তিগত জীবনে অপু বিশ্বাস বিয়ে করেছেন সুপারস্টার শাকিব খানকে। ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ে করেন তারা। তবে ক্যারিয়ারের কথা ভেবে দু’জনেই বিষয়টি গোপন রাখেন। ২০১৭ সালে বিয়ের কথা প্রকাশ্যে আনেন অপু। সেই সঙ্গে জানান, তিনি একটি সন্তানের মা হয়েছেন। সেই সন্তানের নাম আব্রাহাম খান জয়। ওই বছরের ২২ নভেম্বর তালাকের আবেদন করেন শাকিব। ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এ দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হয়।