সিনেমাপ্রেমীদের কাছে এক আবেগের নাম সালমান শাহ। মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে তরুণ প্রজন্মের স্টাইল আইকন হয়ে উঠেছিলেন ঢালিউডের ক্ষণজন্মা এই নক্ষত্র। আর তাইতো মৃত্যুর দুই যুগ পরেও আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা তার।
শুধু ভক্তমহলে নয়, সহকর্মীদের মাঝেও তিনি প্রাণবন্ত। প্রিয় বন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন খল অভিনেতা ডন।
সালমান প্রসঙ্গে ডনের সঙ্গে আলাপনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। সেখানে বেশ ইমোশনাল হয়ে ধরা দিয়েছেন ডন।
তিনি বলেন, ইমোশনাল হয়ে গেছি, কথা বলতে পারছি না। আমি তো ওকে (সালমান) এভাবে চাইনি। সে খুব মজার মানুষ ছিল। গত ২৪-২৫ বছর ধরে সালমান সম্পর্কে এত কথা বলেছি, এখন আর বলতে ইচ্ছা করছে না। একটা কথাই বলব, ‘তুই (সালমান) নেই আজ। তাই আমার সব আনন্দই অপূর্ণ থেকে যায়।’
ডনের ভাষ্য, সালমান আমার কী ছিল, আমি সালমানের কী ছিলাম, সেটা শুধু সে আর আমি জানি। সালমান যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক। আমি সালমানকে খুব ভালোবাসি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেসে যাব। সে আমার আত্মার অংশ। আল্লাহ্ ওকে একটা ভালো জায়গায় রাখুক, ওর আত্মাকে শান্তি দিন, এটা আমার দোয়া।
তিনি যোগ করেন, হয়তো কিছু মানুষ আমাকে ভুল বুঝে, আবার কিছু মানুষ জানে আমি তার (সালমান) বেস্ট ফ্রেন্ড। কে ভুল বুঝল আর কে বুঝল না, এটা নিয়ে আর ভাবতে চাই না।
সালমান শাহ পরবর্তী সময়ে যারা চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার জন্য এসেছেন তারা প্রত্যেকেই বলেছেন, সালমান শাহই ছিলেন তাদের অনুপ্রেরণার প্রধান উৎস।
অনুরাগীদের অনেকেই মনে করেন, অল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন বলেই এত দ্যুতি ছড়াতে পেরেছিলেন সালমান, কেটে গেছেন দাগ। যে দাগ তার প্রস্থানের এত বছর পরেও সমুজ্জ্বল। তার অনুপস্থিতি আর অকাল প্রস্থান আজও পোড়াচ্ছে বাঙালির মন। তাকে বলা হয় ৯০ দশকের শ্রেষ্ঠ নায়ক।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে ঢাকাই সিনেমায় অভিষেক হয় সালমান শাহ’র। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ২৭টি চলচ্চিত্রে। তার অভিনীত ছবির মধ্যে রয়েছে- ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেন মোহর’, ‘তোমাকে চাই’, ‘বিক্ষোভ’, ‘বিচার হবে’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘আশা ভালবাসা’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহামিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘আঞ্জুমান’, ‘কন্যাদান’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘প্রেম যুদ্ধ’, ‘স্নেহ’, ‘সত্যের মৃত্যু নাই’, ‘সুজন সখী’, ‘তুমি আমার’, ‘প্রিয়জন’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘বুকের ভিতর আগুন’, ‘প্রেম পিয়াসী’। সালমান শাহ অভিনীত প্রায় সবগুলো চলচ্চিত্রই ব্যবসায়িক সফলতা লাভ করে।