ক্যারিয়ারের সুসময়ে থাকা অবস্থায় একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকটাই আড়ালে চলে যান অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তবে দমে যাননি তিনি। সব সমালোচনা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।
সেই ঘটনা আজও পিছু ছাড়েনি প্রভার। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় তিনি কথা বললেও এবার পুরোপুরি রাজীব বিষয়ে জানিয়েছেন তিনি নিজেই। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও ঘনিষ্ঠ সূত্রের মাধ্যম থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রভা জানান, শোনেন, প্রথমত আমি রাজিবকে সব জানিয়ে বিয়ের কথা শুরু হয়।
কারণ বিয়ের নয় দশ মাস আমার সঙ্গে রাজিবের ব্রেকআপ থাকে, আমাদের সেই আট বছরের সম্পর্কের অলমোস্ট ৫-৬ বছরই ব্রেকআপ থাকতো। রাজিব আমাকে কখনই সম্পর্ক থেকে বের হতে দিত না। এটা ওর সাইকোলজিকাল সমস্যা ছিল। ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলে ও! কারণ ওর বাবা ওর মাকে ছেড়ে খুব ছোটবেলায় অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছিল। তাই হয়তো ওর মনের মধ্যে ঐ জেদ ছিল যে, ওকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না! আর তাই এই আমাকে বিভিন্নভাবে কনভেন্স করে পার্সোনাল কিছু মুহূর্তের চিত্র ধারণ করে রাখে। যাই হোক সেটা যদি আপনারা সাইবার ক্রাইমের বিভিন্ন গল্প পড়ে থাকেন যে, কেমন করে ছেলেরা মেয়েদেরকে কনভেন্স করে, তাহলে আরো ক্লিয়ারলি জানতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, যাইহোক ঐ ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা হয়েছিল, আংটি বদল হয়েছিল কিন্তু সে আংটি বদল আর আট মাস আগে ছেলের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। ঐ যে বললাম, আমাদের আট বছরের সম্পর্কের ব্রেকআপই থাকতো অনেক। তো বিয়ের কথা শুরু হওয়ার সময় আমি রাজীবকে জানিয়ে দেই বিগত এতগুলো মাস আমার কার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, আমি সেই ছেলে তার সঙ্গে আমার ভালো লাগা আছে; কিন্তু এটা হওয়ার না, হবে না বুঝেই গেছি- এরকম কথাগুলো আমি তার সঙ্গে ক্লিয়ার করে নিয়েছিলাম। আমার তখন বয়স ছিল ২২, মাথায় বুদ্ধি ছিল না। থাকলে তো সবার আগে রাজীবের সঙ্গে প্রেম করতাম না।
‘বুদ্ধি যদিও আমার এখনো হয় নাই। যাই হোক আমার কাছে মনে হয়েছে, বিয়ে করার আগে তাকে সব কিছু জানিয়ে দেই, যে কার সঙ্গে মাঝখানে সম্পর্কে হতে গিয়েও হয় নাই! (যার কথা বলছি ওনার সঙ্গে আমার পরবর্তীতে বিয়ে হয়েছিল, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলাম তাকে) এতে হিতে বিপরীত হয়েছে। আমাদের এঙ্গেজমেন্টের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই রাজীবের সঙ্গে আমার কথা বলা বন্ধ থাকত। ঝগড়া হতো বিভিন্ন কারণে। প্রচণ্ড মিথ্যা কথা বলতো। সব কিছু মিলিয়ে আমার মন যখন কোনোভাবেই মানছিল না ওকে বিয়ে করতে, আমি বারবার ওকে অনুরোধ করছিলাম যে, চলো বিয়েটা না করি। আমাদের এই বিয়ে ছয় মাসও টিকবে না! একথা আমি আমার বাসায়ও বলেছিলাম। কিন্তু আমার তো অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল। ২২/২৩ বছরের একটা মেয়ে বিয়ে তো করতেই হবে বলেন! যাইহোক এ সমস্ত কথা আর নাই বলি!’
এছাড়া তিনি আরো নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানান, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটা খুব না জানা আপনাদের। যেদিন এই ঘটনাটা ঘটে তার বেশ কিছুদিন ধরে আমার আর রাজীবের খুব ঝগড়া, খুব বিশাল ঝগড়া হতো। রাজীব বুঝে গেছিল যে আমার মনটা নাই। আমি তাকে ভেঙে নিজেই বলছি যে, শুধু আংটি পরানো হয়েছে, কিন্তু আর কিছু হয় নাই। চলো এটা এখানেই শেষ করি। কিন্তু সে তো নাছোড়বান্দা, তার ওপর সাইকোলজিক্যাল সমস্যা ছিল তার। মাথায় ছিল তার বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে গেছিলো, তাকে ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না, তার কাছে তো প্রমাণ আছে! প্রমাণ এর কথায় মনে পড়ল, একবার খুব কায়দা করে তাকে জানতে চাইছিলাম যে, কই আছে ওগুলা, চলো তুমি আর আমি মিলে একটু দেখি। তখন সে আমাকে বলছিল, তুমি কি পাগল; তুমি আমার বউ হবা এজন্য আমি সব কিছু ডিলিট করে দিছি। আসলে তো ডিলিট করে নাই। এখন বুঝতে চান, মানসিকভাবে মানুষটা কি পরিমাণ ক্রিমিনাল মাইন্ডেড?
‘তারপর সে আমার বাসায় এ ব্যাপারে বিচার বসায়। আমার বাবা-মা আমাকে বকাঝকা করে সত্যি কথা বলি। আমি বাবা-মাকে কষ্ট দিয়েছি, আমি আমার বাবা মাকে না বলে বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে আরেকজনের হাত ধরছিলাম। কিন্তু যার হাত ধরতে বলছিল ঐ সময়ে সেই মানুষটাও তো ভুলই ছিল। যদিও সেই মানুষটার আমাকে পছন্দ ছিল, আসলে আমি নিরুপায় পছন্দ করেছিলাম। বাসায় এত বিয়ের চাপ দেওয়া হয়েছিল যে, আমি নিরুপায় হয়ে ওকে বলেছিলাম ঠিক আছে তুমি আমাকে বিয়ে করো। কিন্তু আমি তো সব জানিয়ে বিয়েটা করতে গিয়েছিলাম।
‘সেদিন বাসায় এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, আমার কাছে মনে হয়েছিল যে, এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার এই একটাই উপায় আর তাছাড়া আমাকে ফোন করে বলা হয়েছিল- তুমি বাসা থেকে বের হও, আব্বু-আম্মুর সঙ্গে আমার কথা বলা। তুমি বের হলে আমাদের বিয়ে। ভরসাই লাগছিল। ভেবেছিলাম বিয়ের কয়মাস পর বাবা-মা মেনে নেবে। তখন তো আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে! যাই হোক বের হয়ে গেলাম, বিয়ে হলো। সকাল সকাল ফোন দিয়ে রাজিবকে জানিয়ে দিলাম আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে ও যেন আনন্দ থাকে। কিন্তু দুই দিনের মধ্যে সেই ডিলিট করা (আসলে তো মিথ্যা) ডকুমেন্টগুলো সে পাবলিক করে।’