শোয়েব মালিকের প্রেমে পড়লেন কে? পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন, সানিয়া মির্জার সঙ্গে তার বিয়ে ভাঙতে বসেছে। তার অন্যতম কারণ, তৃতীয় ব্যক্তি।
অতঃপর প্রশ্ন উঠছে, শোয়েবে মজলেন কে? কে সেই তৃতীয় ব্যক্তি, যিনি ভারত-পাক জুটির মাঝে মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়েছেন? আপাতত শোয়েবের সঙ্গে বিতর্কে নাম জড়িয়েছে দু’জনের।
এই দু’জনের মধ্যে প্রথম জন হলেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী আয়েশা ওমর। ২০২১ সালে একটি ম্যাগাজ়িনের জন্য ফটোশুটে এক সঙ্গে দেখা গিয়েছিল শোয়েব ও আয়েশাকে। তারপর থেকেই অভিনেত্রীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে পাক ক্রিকেটারের নাম।
ফটোশুটের ছবিগুলিতে শোয়েব এবং আয়েশাকে বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গিয়েছিল। পুলের জলে নেমে দু’জনের সিক্ত শরীরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। পাক অভিনেত্রীর সঙ্গে শোয়েবের এমন ঘনিষ্ঠ ছবি দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, দু’জনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কি না।
পুলের জলে শোয়েবের সঙ্গে রীতিমতো রোম্যান্সে মজেছিলেন অভিনেত্রী আয়েশা। গাঢ় কমলা রঙের পোশাকে উষ্ণতা ছড়িয়েছিলেন তিনি। তাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তুলেছিলেন শোয়েব। তার পরনে ছিল হালকা বেগুনি রঙের শার্ট।
শুধু পুলের জলে দাঁড়িয়ে নয়, সংশ্লিষ্ট ম্যাগাজ়িনের জন্য আরও একাধিক ছবি তুলেছিলেন দুই পাক তারকা। কখনও তাদের দেখা গিয়েছিল শোয়ার ঘরে রোম্যান্টিক ভঙ্গিতে দাঁড়াতে, কখনও আবার খাবার টেবিলে দু’জনের খুনসুটি।
আয়েশার সঙ্গে শোয়েবের সম্পর্ক নিয়ে যতই জল্পনা চলুক, কোনো পক্ষই তা নিয়ে মুখ খোলেনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যখন শোয়েবের বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তখন অনেকে মনে করছেন, তার সঙ্গে গোপনে প্রাক্তন পাক ক্রিকেটারের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কি না। সেই কারণেই কি সানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙনের সূত্রপাত?
অবশ্য আয়েশা নন, অন্য এক পাক অভিনেত্রীর সঙ্গেও শোয়েবের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মাহিরা খানের সঙ্গে শোয়েবের নাম জড়িয়েছিল।
মাহিরার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে একবার আড্ডায় বসেছিলেন শোয়েব। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই শো-তে দেখা গিয়েছিল, অভিনেত্রীর সঙ্গে রীতিমতো ‘ফ্লার্ট’ করছেন সানিয়ার স্বামী।
লাইভে মাহিরা বলেছিলেন, ‘আমাদের দু’জনেরই বয়স বেড়ে গিয়েছে।’ তার উত্তরে শোয়েবকে বলতে শোনা গিয়েছিল, তার নিজের বয়স বেড়েছে ঠিকই, তবে মাহিরার বয়স বাড়েনি। মজার ছলেই মাহিরা তখন শোয়েবকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘বৌদি এই লাইভ দেখছে কি?’
মাহিরার প্রশ্নের জবাবে শোয়েব জানিয়েছিলেন, সানিয়া তাদের লাইভ দেখছেন। তবে তিনি মাহিরার ‘বৌদি’ নন। হাসতে হাসতে তখন অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, সানিয়া গোটা পাকিস্তানের ‘বৌদি’।
শোয়েব, মাহিরার এই কথোপকথনের পরিপ্রেক্ষিতে সানিয়ার প্রতিক্রিয়াও পাওয়া গিয়েছিল। ইনস্টাগ্রামেই তিনি লিখেছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি দেখতে পাচ্ছি তোমরা দু’জন কী নিয়ে কথা বলছ।’
ইনস্টাগ্রামে সেই শো-এর পরেই গুঞ্জন, মাহিরার সঙ্গে পাক ক্রিকেটারের কোনো গোপন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কি না। সানিয়া-শোয়েবের বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মাঝে মাহিরার সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন আরও ডালপালা মেলেছে।
পাকিস্তানের কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সানিয়া-শোয়েবের দীর্ঘ ১২ বছরের দাম্পত্যে ভাঙন ধরতে চলেছে। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। ক্রীড়া জগতের অন্যতম জনপ্রিয় দম্পতি হিসাবে পরিচিত তারা। তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি জাং’ দাবি করেছে, সানিয়া এবং শোয়েব নাকি গত কয়েক দিন ধরে একসঙ্গে থাকছেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সানিয়ার কিছু পোস্ট থেকেও মন ভাঙার ইঙ্গিত মিলেছে।
এই ভারত-পাকিস্তান জুটির এক মাত্র সন্তান ইজহান মির্জা মালিক। সানিয়া-শোয়েব একসঙ্গে না থাকলেও একসঙ্গেই ছেলের দেখাশোনা করছেন বলে খবর।
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে সম্প্রতি সানিয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘ভাঙা হৃদয় কোথায় যায়? ঈশ্বর খুঁজতে।’
ছেলের সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করেছেন সানিয়া। সে ছবিতে দেখা গিয়েছে ছোট ইজহান মাকে চুমু খাচ্ছে। ছেলের ছবির সঙ্গে সানিয়া লিখেছেন, ‘যে মুহূর্তগুলো কঠিন সময় পার করে দেয়।’ এই পোস্টেও ঘর ভাঙার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
সানিয়া-শোয়েবের প্রথম দেখা হয় ২০০৩ সালে। সানিয়া পাকিস্তানি ক্রিকেটারকে প্রথম দিকে বড় একটা পাত্তাই দিতেন না। সংবাদমাধ্যমে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন শোয়েব।
সানিয়া-শোয়েব পুরোদমে প্রেম করতে শুরু করেন ২০০৯ সালে। সানিয়া জানিয়েছিলেন, শোয়েবের সারল্য, সাধারণ জীবনযাপনই তার মন জয় করে নিয়েছিল। ৮ বছর সংসার করার পর ২০১৮ সালে তাদের কোল আলো করে পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।
সানিয়া-শোয়েবের প্রেম, সম্পর্কের বন্ধন দেখে এক সময় মনে হত, তারা বুঝি অবিচ্ছেদ্য। তাদের অনুরাগীরাও সে কথা জোর গলায় বলতেন। তবে সম্প্রতি গুঞ্জন বলছে, বিচ্ছেদ আসন্ন। সেই বিচ্ছেদের নেপথ্যে কে? জল্পনা দানা বেঁধেছে তা নিয়েও। উঠে এসেছে দুই পাক অভিনেত্রীর নাম।