আসন্ন কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখেও ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে নানা কীর্তি-কাণ্ডের ঢেউ বইছে। কেউ প্রিয় দলের পতাকার রঙে ভবন রাঙায়, কেউবা বাড়ির
ছাদে দীর্ঘ পতাকা ওড়ায়, আবার সমর্থকরা মিলে পতাকা টানায় কয়েক কিলোমিটারব্যাপী। এদিকে ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উলচাপাড়া গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলামের তিন ছেলে তাদের বসতঘরে আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে রাঙিয়েছেন। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উন্মাদনা বাড়ছে।
শেখ আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে দারু মিয়া ছিলেন আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের একজন অন্ধ ভক্ত। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি তার এই ভালবাসার কথা এলাকার সবাই জানেন। ৯ ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ফুটবল এই প্রেমী ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মারা যান। জানা যায়, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ উপভোগ করেছিলেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ারুল ইসলাম। কিন্তু এ বছর বিশ্বকাপে বাবার শূন্যতা অনুভব করছেন তার সন্তানরা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পিতার প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে তার পছন্দের দল আর্জেন্টিনার প্রতাকার আদলে নিজের বসতঘর রঙ করেছেন ছোট তিন ছেলে।
আনোয়ারুল ইসলামের ৯ ছেলে। তারা একসঙ্গেই আছেন। এরমধ্যে ৬ ছেলে জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত। বাড়িতে রয়েছেন ছোট তিন ছেলে শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ (২৮), শেখ তারেক আহমেদ (২৬) ও শেখ রোহান উদ্দিন (২৩)। এই তিন ছোট ছেলেই নিজেদের বাড়ি রাঙিয়েছেন আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে।
শেখ আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে শেখ তারেক আহমেদ বলেন, আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি আমাদের অগাধ ভালবাসা। এই ভালবাসা সেই ছোটবেলা থেকে। যখন আমরা ছোট ছিলাম, আব্বা রাত ৩টায় আমাদের পরিবারের সবাইকে আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা টিভিতে দেখতে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন। আমার আব্বা ছিলেন আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। তখন থেকেই দলটির প্রতি আমাদের ভালবাসা তৈরি হয়েছিল। এখন আমার আব্বা নেই, আব্বার ভালবাসা এবং আব্বার প্রতি সম্মান জানিয়ে আর্জেন্টিনার পতাকার আদলে বসতঘর রঙ করেছি।
শেখ তাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বসতঘরটিতে শয়ন কক্ষ রয়েছে ৫টি। যার পরিমাণ ১০৮০ স্কয়ার ফিট। গত এক সপ্তাহে আট জন মিস্ত্রীসহ আমরা তিন ভাই এই রঙের কাজ করেছি। ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, আমি এবং আমার পরিবারের সবাই আর্জেন্টিনার ভক্ত। আমার বাবা ছিলেন এই দলের অন্ধ ভক্ত।