আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন দীপু মনি

গেল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ডা. দীপু মনি রেকর্ড সংখ্যক বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। এমন অনেক বিষয়ে তিনি আলোচিত ছিলেন। প্রতাপশালী এই মন্ত্রী কয়েকদিনের ব্যবধানে খুনের আসামি হয়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন। হয়তো আরাম আর কষ্টের কথা মনে করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি আবেগ ধরে রাখতে পারেননি, তাই কাঁদলেন অঝর ধারায়। যতক্ষণ কাঠগড়ায় ছিলেন ততক্ষণই তিনি কাঁদলেন। এর আগে-পড়ে আইনজীবীদের ক্ষোভের বস্তু হওয়ায় কেঁদেছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সোমবার আটক হওয়ার পর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হয় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে। একই সঙ্গে সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কেও আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এদিন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন তাদের দুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মোহাম্মদপুর থানায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনেক হৈ চৈ এর মধ্যে আদালতের কাঠগড়ায় উঠানো হয় দীপু মনিকে। এসময় আইনজীবীরা ‘চোর’, ‘ফাঁসি চাই’ বলে চিৎকার করছিলেন। আসামিদের হাতে হাতকড়া না থাকায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আসামিদের হাতকড়া পরানোর জন্য চিৎকার করতে থাকেন। এরপর আসামি জয়কে হাতকড়া পরানো হয়। নারী বিবেচনায় দীপু মনিকে হাতকড়া পরানো হয়নি।

পরিস্থিতিতে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বিহ্বল হয়ে পড়ে কাঠগড়ার এক কোনে গিয়ে মাথা নিচু করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ভিকটিমকে হত্যার ঘটনার বিষয়ে এ দুই আসামি জ্ঞাত আছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার ভিকটিমকে হত্যায় হুকুমদাতা, উসকানিদাতাদের নামসহ মামলার ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাপর আসামির নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং মামলার মূল রহস্য উৎঘাটন, এজাহারে বর্ণিত সহিংস ঘটনার বিষয়ে এবং মামলার ভিকটিমকে হত্যাকারী, হত্যার হুকুম দানকারী, উসকানিদানকারী ব্যক্তি ও ব্যক্তিদের নাম ও ওই ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ এবং গ্রেফতারের নিমিত্তে ডা. দীপু মনি (৫১) এবং আরিফ খান জয়কে (৫৩) দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আদেশদানে আদালতের সদয় মর্জি হয়।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর বারিধারা থেকে ডা. দীপু মনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আরিফ খান জয়কে। তাদের আজ আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।