‘আমি সিঙ্গেল, তবে উৎসবের দিনে পাশে কেউ থাকলে মন্দ হয় না’

আর ৯ দিন পরই শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পুজাকে কেন্দ্র করে কলকাতা শহর থেকে শহরতলি সেজে উঠেছে উৎসবের আলোয়। বিগত দু’বছরে করোনা মহামারির কারণে উৎসবের জৌলুস কেমন যেন ম্লান হয়ে গিয়েছিল। পুজার দিনগুলিতেও অনেককেই কাটাতে হয়েছিল নিভৃতবাসে। উৎসবের আলো থেকে দূরে ছিলেন— এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। এ বছর কিছুটা হলেও কোভিড পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তাই প্রাণ খুলে আনন্দ করার জন্য তৈরি হচ্ছেন সকলে।

বাঙালির উৎসব-উদ্‌যাপনের অন্যতম অঙ্গ সাজগোজ। সাধারণ মানুষ থেকে তারকা— পুজার সাজে পাল্লা দিতে পিছিয়ে নন কেউ-ই। টলিপাড়ায় এখনও পুজার ছুটি পড়েনি। জোরকদমে শ্যুটিং চলছে। পুজার ছুটির আগে যতটা কাজ গুছিয়ে রাখা যায়। ব্যস্ততার মধ্যেই তারকারা সেরে নিচ্ছেন কেনাকাটা। পুজার পাঁচটি দিন কী করবেন, সেই পরিকল্পনাও করে রাখছেন।

ভারতীয় বাংলা ‘আকাশ আট’ চ্যানেলের নতুন ধারাবাহিক ‘শ্রেয়সী’র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্কজা আচার্য। পুজায় কী কী কিনলেন অর্কজা? পুজার ছুটি কী ভাবে কাটাবেন তিনি?

অর্কজা বলেন, ‘‘পুজায় আমি কলকাতায় থাকছি না। ষষ্ঠী পর্যন্ত শ্যুটিং। সপ্তমীতে মেঘালয় যাচ্ছি। একাদশী ফিরছি। আমি পাহাড়ে ঘুরতে খুব ভালবাসি। মাঝে দু’বছর কোভিডের জন্য যেতে পারিনি। সারা বছর তো ছুটি পাই না। পুজার ছুটিটা কাজে লাগিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। যেহেতু ঘুরতে যাচ্ছি তাই পুজার জন্য আলাদা করে খুব যে কেনাকাটা করেছি, এমন নয়। বাবা-মায়ের জন্য কিনেছি। মূলত বেড়াতে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু পোশাক কিনতে হয়েছে। কয়েকটা শাড়ি হয়েছে। সেগুলো হয়তো লক্ষীপুজা, কালীপুজাতে পরব। ষষ্ঠী পর্যন্ত শ্যুটিং রয়েছে। ইচ্ছা রয়েছে সে দিন শ্যুটিং-এর পর বন্ধুদের সঙ্গে একটু বেরোব। মা-বাবাকে নিয়ে খেতে যাব। আপাতত এটুকু ভেবে রেখেছি।

পুজার আগে সব ক্ষেত্রেই ব্যস্ততা তুঙ্গে থাকে। ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে সেই চাপটা আরও বেশি। কেনাকাটা করার সময় কী করে বার করলেন অর্কজা। অভিনেত্রীর কথায়,‘‘শ্যুটিং সেরে যখন বাড়ি ফিরি তত ক্ষণে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া এত ক্লান্ত থাকি তখন আর ইচ্ছাও করে না। তাই অনলাইনে কিছু জামাকাপড় কিনে নিয়েছি। মা খুব করে ধরেছিল দোকানে গিয়ে কিছু কেনার জন্য। তাই মায়ের সঙ্গে এক দিন গিয়েছিলাম।’’

পুজা মানেই জমিয়ে ভূরিভোজ। মায়ের হাতের সুস্বাদু সব রান্না। উৎসবে নিজের শহর, মা-বাবা, পুজার ভোগ, বিরিয়ানি, বন্ধুবান্ধবদের ছেড়ে নির্জন পাহাড়ি গ্রামে মন টিকবে তো? অকর্জার উত্তর ‘‘মিস্‌ তো অবশ্যই করব। মা-বাবাকে আমার সঙ্গে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু ওঁরা পুজাতে কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে চায় না। তাই একাই যেতে হচ্ছে। আমি বিরিয়ানি খেতে প্রচন্ড ভালবাসি। অষ্টমীর ভোগও আমার দারুণ প্রিয়। আমাদের বাড়ির পাশেই পুজা হয়। মাকে বলেছি আমার জন্য অষ্টমীর ভোগ ফ্রিজে তুলে রাখতে। একাদশীর দিন ফিরে এসে খাব।’’

পুজা আর প্রেম যেন হাত ধরাধরি করে চলে। পুজা প্রেমের অভিজ্ঞতা কমবেশি সকলেরই আছে। কিন্তু যাঁদের জীবন সারা বছরই প্রেমময়, উৎসবের দিনগুলি কি তাঁদের আরও রঙিন হয়ে ওঠে? ‘‘অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে গিয়ে চোখাচোখি কম হয়নি। পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে পুজায় ঘুরতে বেরিয়ে এমন টুকটাক অনেক প্রেমে পড়তাম। তবে সে সব কলেজবেলায়। আমার মনে হয় পুজা প্রেম পুজাতেই সীমিত থাকে। তার পরে আর এগোয় না। প্যান্ডেলে ঘুরতে ঘুরতে কারও সঙ্গে চোখাচোখি হল। তার সঙ্গেও হয়তো ফুচকাও খেলাম। ব্যস, ওইটুকুই। তবে আমি একেবারে বিচ্ছিরি রকমের ‘সিঙ্গল’। এখনই ‘দোকা’ হওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই। উৎসবের দিনে পাশে কেউ থাকলে মন্দ হয় না। ভবিষ্যতে নিশ্চয় এমন কিছু হবে।’’