এক টানে ২২০ মণ ইলিশ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সূর্য মাঝি ট্রলার নিয়ে গত বুধবার বঙ্গোপসাগরে যাওয়ার পর জাল ফেলেছিলেন মৌডুবি এলাকা থেকে পূর্ব-দক্ষিণে ৪০ কিলোমিটার গভীরে। বৃহস্পতিবার জাল তুলতে গিয়ে তো চক্ষু চড়কগাছ! জাল ভর্তি ইলিশ আর ইলিশ। সেই মাছ বরফে সংরক্ষণের জায়গা ছাপিয়ে স্থান নেয় ট্রলারের ওপরেও। এর পরও সব ইলিশ নিতে পারেননি সূর্য। শেষ পর্যন্ত আরও প্রায় ৫০ মণ মাছ দিয়ে দেন অন্য একটি ট্রলারকে। সব মিলিয়ে এক জালে তাঁর ধরা পড়ে অন্তত ২২০ মণ ইলিশ।

এফবি আল্লাহর দয়া-১ নামে মাছভর্তি ট্রলারটি নিয়ে শনিবার তিনি আসেন পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। আলীপুরের খান ফিশে নিলামের মাধ্যমে সেই মাছ বিক্রি শেষ হয় রোববার বেলা ১১টার দিকে। বছরের সবচেয়ে বেশি মাছ পাওয়া ট্রলারটি বাঁশখালীর আহম্মদ শফী কোম্পানির মালিকানাধীন।

সূর্য মাঝি সমকালকে জানান, এত মাছ ধরা পড়ে যে, তিনি নিজের ট্রলারে সবটা নিতে পারেননি। পরে আরেকটি ট্রলারকে প্রায় পাঁচ হাজার পিস বা অন্তত ৫০ মণ মাছ দিয়ে আসেন।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, বরফ না থাকায় যে মাছ এনেছেন তার মধ্যে প্রায় ২০ মণ পচে নষ্ট হয়েছে। বাকি ১৫০ মণ মাছ বিক্রি করেছেন। তবে পুরো তাজা না থাকায় ৪০ লাখ টাকার মতো দাম পেয়েছেন। সব মাছ ঠিকমতো সংরক্ষণ করতে পারলে প্রায় ১০ লাখ টাকা বেশি পেতেন।

খান ফিশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রহিম খান জানান, কোনো ট্রলারের এটিই এ বছর সবচেয়ে বেশি মাছ পাওয়া। আকৃতি ও মান অনুযায়ী ১০ রকম দামে মাছগুলো বিক্রি হয়েছে। মণপ্রতি সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৬০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া গেছে। পরে আলীপুর-মহিপুরের পাইকাররা ৫-১০ মণ করে কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছেন। সামনে পহেলা বৈশাখ থাকায় ভালো দাম পাওয়া যাবে।

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে কার্যকর করতে পারায় এত মাছ পাওয়া গেছে। আগামী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন ফের সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তার আগ পর্যন্ত জেলেরা এমন মাছ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।