গ্রামের ২ টাকার বেগুন ঢাকায় ৮০ টাকা

রাজধানীর বাজারে গেলে দামের আগুনে পকেট পুড়ে যায় ক্রেতাদের। অথচ একেবারেই বিপরীত চিত্র গ্রামের হাটগুলোতে। ঢাকায় যে বেগুন ৮০ টাকা কেজি, গ্রামের হাটে সেই বেগুন পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে মাত্র আড়াই টাকায়! অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই সত্য। বগুড়ার শাহজাহানপুরের দুবলাগাড়ি হাটে সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে, রাজধানীতে খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি বেগুনের দাম ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অথচ মানিকগঞ্জ, পাবনা ও বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে। এসব জেলার উৎপাদিত বেগুনের একটি অংশ সরবরাহ হয় রাজধানী ঢাকায়।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও ঘিওরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি করছেন ৫-৬ টাকা কেজিতে। আর আড়তগুলোতে তা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।

বগুড়ার শাহজাহানপুর, শেরপুর ও ধুনট উপজেলার গ্রামাঞ্চলে কৃষক পর্যায়ে মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬-১০ টাকায়। চাষিদের অভিযোগ, তারা ফলনের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। কয়েক দফা হাত বদলে ১০-১২ গুণ দাম বাড়ছে পণ্যটির।

বগুড়ার এক চাষি জানান, এখন আমাদের বেগুন হাটে নিলে নিতেই চায় না। খুচরা বাজারে ৫-৬ টাকা কেজিতে এখন বিক্রি হচ্ছে।

আরেক চাষি জানান, দাম কম দেখে আমরা বিক্রি করাই বন্ধ করে দিয়েছি। এখন ক্ষেতেই রয়ে গেছে। কীটনাশক খরচ, সারের খরচ ও জমির ভাড়া দিলেও বেগুন বিক্রি করে সে পরিমাণ টাকা পাচ্ছেন না কৃষক।

মঙ্গলবার বগুড়ার শাহজাহানপুরের দুবলাগাড়ি হাটে গিয়ে কথা হয় বেশ কিছু বেগুন চাষিদের সঙ্গে। তারা জানান, গতকালও বেগুন তারা মণপ্রতি বিক্রি করেছেন চারশ’ থেকে সাড়ে চারশ’ টাকায়। আজ সেই বেগুনের দাম নেমে এসেছে মণপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। হঠাৎ এমন দাম পড়ে যাওয়ায় চাষিরাও হতাশ।

নিজেরা বেগুন বিক্রি করছেন আড়াই টাকা কেজি দরে, শহরের বাজারে কত দামে বিক্রি হচ্ছে, এমন তথ্য জানা আছে কিনা জানতে চাইলে এক কৃষক হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কম দামে বেগুন কিনে শহরে বেশি দামে বিক্রি হয় জানেন। কিন্তু এত পার্থক্য কোনোভাবেই কাম্য না।

দুবলাগাড়ি হাট পেরিয়ে শহরের একটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। বিক্রেতারা জানালেন, গেল দু-একদিনে বেগুন ছাড়াও অন্য সবজির দামও কমেছে। কেন কমেছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ভালো উৎপাদন হয়েছে বলে জানান তারা।

অন্যদিকে ক্রেতারাও কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, সবজির দাম কমেছে। চাপ কমেছে তাদের পকেটের ওপরও।