নিজের বানানো গাড়িতে কলেজে যান রিশান

বগুড়ার সোনাতলায় কলেজছাত্র আব্দুর রহমান রিশান তৈরি করেছেন প্রাইভেট কার। সেই গাড়ি নিয়ে তিনি নিয়মিত কলেজে যাতায়াত করেন। কলেজছাত্র রিশানের গাড়ি তৈরি ও গাড়িতে চড়ে যাতায়াতের ঘটনায় এলাকায় আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন রিশান ও তার তৈরি কার গাড়ি দেখতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা।

জানা যায়, প্রতিভাবান যুবক রিশানের জন্ম বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পদ্মপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম ইউনুছ আলী ও মার নাম ফরিদা বেগম। সৈয়দ আহম্মদ কলেজের বিএম শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুর রহমান রিশান দীর্ঘ ১৮ মাস অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে তৈরি করেছে ওই গাড়িটি।

কার গাড়িটি তৈরি করতে রিশানের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। করোনা অতিমারিতে কলেজ বন্ধ থাকায় দীর্ঘ ১৮ মাস সময়কে কাজে লাগিয়ে প্রায় ৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩ ফুট প্রস্থের ১০০ সিসি বিশিষ্ট ইঞ্জিনের ২ সিটের গাড়িটি তৈরি করেছেন রিশান। নিজের গচ্ছিত টাকাসহ আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে নেয়া অর্থে গাড়িটি তৈরি করেছেন। পেট্রোল চালিত এ গাড়িটি ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।

আব্দুর রহমান রিশানের পিতা ইউনুছ আলী জানান, তার একমাত্র ছেলে রিশান। সে তার নিজস্ব উদ্ভাবনী চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে কার গাড়িটি তৈরি করেছে। ছেলের এ ধরনের কাজে তিনি খুব খুশি।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান একেএম লতিফুল বারী টিম জানান, লোকমুখে শুনে বিষয়টি তিনিও দেখেছেন। গাড়িটির বডি তৈরীর বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না তার। তারপরও সে বিভিন্ন উপায়ে গাড়িটি তৈরি করে নিজেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি আনন্দের। আমি তার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি।

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন রিশানের গাড়ির বিষয়ে বলেন, রিশানের এমন উদ্ভাবনী দক্ষতায় আমরা গর্বিত। প্রায় এক বছর আগে রিশানের এই প্রচেষ্টা স্বচক্ষে দেখে এসেছেন। রিশানের এ ধরনের প্রচেষ্টা আরও অগ্রগামী করতে বিশেষ করে সরকারি যথাযথ দপ্তরকে জানিয়ে সহযোগিতা দেয়ার ক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকবো।

এ ধরনের উদ্ভাবনী কাজে আরও বেশি করে মনোনিবেশ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে রিশান বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আমি আরও ভাল কিছু তৈরি করতে পারবো।

এই উদ্ভাবনী কাজটি করতে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বিশেষ করে টাকার যোগান ছিল কষ্টসাধ্য। তারপরও বিভিন্নজনের কাছে থেকে সহযোগিতা নিয়ে কারটি তৈরি করা হয়েছে। এখন এই কারটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে। সবায় জানতে চায় কি করে কারটি তৈরি করা হয়েছে। না না প্রশ্ন থাকে উৎসুক জনতার। কেউ কেউ আবার কারে উঠে দেখতে চায়।