পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। শনিবার সকালে মসজিদের আটটি দানবাক্সে সর্বোচ্চ ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এতে টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ডসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে।

সারাদিন ধরে এই টাকা গণনা করা হয় বলে জানান কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। দানের এসব অর্থ দিয়ে এবার পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্সে তৈরির কাজে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খুলে দানের টাকাগুলো ২০টি বস্তায় ভরে আনা হয় গণনার জন্য। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে টাকা গণনার কাজ শেষ হয়।

মাদ্রাসার শতাধিক ছাত্রসহ পঞ্চাশজন ব্যাংক কর্মকর্তা এই টাকার গণনা করেন। তিন মাস পরপর এমন দৃশ্যের দেখা মেলে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে। এর আগে গত বছর অক্টোবরে ৮ দানবাক্সে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা।

সাধারণত মসজিদের এই টাকা জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হয়। তবে এবার ভিন্ন পরিকল্পনা মসজিদ কর্তৃপক্ষের।

দানের স্বর্ণালঙ্কার ছাড়াও গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রতিদিন নিলামে বিক্রি করে তা রাখা হয় মসজিদের একাউন্টে।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াই’শ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। তার মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে।

১৯৯৭ সাল থেকে এই মসজিদটি ওয়াকফের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।