বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তাদের এক দফার অংশ ছিল। সেজন্য বিস্তর কাজ ও রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রয়োজন। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে তারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা প্রণয়ন করতে চান।
শুক্রবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে নাহিদ ইসলাম এ সব কথা উল্লেখ করেন। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
সম্প্রতি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে নাহিদ ইসলাম এ সব কথা বলেন। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক মাহফুজও আব্দুল্লাহও একই কথা বলেছেন।
নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘রাজনৈতিক দলগঠন আমাদের গণঅভ্যুত্থানের অভিমুখ না। এই মুহূর্তে প্রয়োজন অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, নতুন করে দেশগঠন-সংস্কার ও অভ্যুত্থানের স্পিরিট ও জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা। ছাত্র-জনতা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এই মূহুর্তে রাজনৈতিক দলগঠনের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নাই। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের স্পিরিট রক্ষায় সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্র পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে।’
এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে মাহফুজ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রয়টার্সে আমার বক্তব্য ছিল, আমরা রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে এখনই ভাবছি না। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য আমরা কাজ করছি। গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধরে রাখা এবং সরকারকে সংহত করা আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। রাষ্ট্র ও সমাজের নানা অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে আমরা আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা নিয়ে ও কাজ করব।’
মাহফুজ আরও বলেন, ‘এ কাজে অন্তত এক মাস লাগবে। আর, রয়টার্সও লিখেছে এক মাস পর নির্ধারিত হবে আমরা দল করব কি করব না! তবে, রয়টার্স একটি ভুল করেছে, নাগরিকদের বদলে তারা ভোটার শব্দটি ব্যবহার করেছে। অথচ, নির্বাচনী রাজনীতি নিয়ে আমাদের খুব কমই কথা হয়েছে। কৃষ্ণ কৌশিককে (রয়টার্সের সাংবাদিক) আমি লিখেছি, উনি হয়তো এটা সংশোধন করে দেবেন।’
রয়টার্সের সঙ্গে আলাপের বিষয়ে এই সমন্বয়ক বলেন, ‘রয়টার্সের সাংবাদিক বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন, দ্বি–দলীয় কাঠামো নিয়ে এবং তা উতরে যেতে রাজনৈতিক দল করব কিনা। আমি বলেছি, আমরা দল বা ব্যক্তি নয়, ব্যবস্থার সংস্কার চাচ্ছি। যাতে যে দলই আসুক তাকে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হয়। কিন্তু, এমনভাবে বলা হলো যেন আমি মাইনাস টু চাচ্ছি। যেটা আমার উদ্দেশ্য না অবশ্যই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনকার লক্ষ্য, রাজনৈতিক লড়াইকে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে গঠনমূলক কাজের দিকে চালিত করা। উপযুক্ত সময়ে রাজনৈতিক গঠন/গড়ন কেমন হবে, তা সবাই জানতে পারবেন।’