চলচ্চিত্রের মতো স্বার্থপর জায়গা আর দ্বিতীয়টি নেই। এ রকম কথা স্বয়ং এ অঙ্গনের মানুষের কাছ থেকেই শোনা গেছে। এ কথার যে যর্থাথতা রয়েছে সেটারই প্রমাণ যেন আরও একবার মিললো।
জীবনের অধিকাংশ সময় চলচ্চিত্রের পেছনে ব্যয় করলেও শেষ বয়সে এসে নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র। একটা সময় যখন অভিনয়ে ব্যস্ত ছিলেন তখন চারপাশ জুড়ে অনেক মানুষ থাকলেও এখন সঙ্গ দেয়ার মতোও কেউ নেই। চলচ্চিত্রের চেনা মানুষগুলো যেন খুব অচেনা।
গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অসুস্থ হলেও ৮১ বছর বয়সী এ অভিনেতার তেমন কেউই এখন খোঁজ নেয় না। খানিক খারাপ লাগলেও এ নিয়ে আক্ষেপ নেই অভিনেতার।
তিনি বলেন, সবাই সবার কাজে ব্যস্ত। তারপরও আমার সঙ্গে যদি চলচ্চিত্রের সহকর্মীরা দেখা করতে আসেন ভীষণ ভালো লাগবে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রবীর মিত্র অস্টিওপরোসিস রোগে (হাড় ক্ষয়) আক্রান্ত। তবে দিল্লির হাসপাতালে পায়ের অস্ত্রোপচার হওয়ায় আগের তুলনায় ভালো আছেন।
বর্তমানে বড় ছেলে মিথুন মিত্রের ধানমণ্ডির বাসায় থাকেন এই অভিনেতা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন প্রবীর মিত্র ও তার ছেলে।
প্রবীর মিত্রকে ঘরের ভেতর থেকে নিয়ে আসা হয় হুইলচেয়ারে করে। কুশল বিনিময়ের সময় অট্টহাসি দিলেন। এই অভিনেতার সঙ্গে কথা শুরুর আগেই ছেলে পাশ থেকে বললেন, বাবা ঠিকমতো কানে শুনতে পান না, মনেও রাখতে পারেন না।
উচ্চস্বরে জিজ্ঞেস করা হলো কেমন আছেন? প্রবীর মিত্র বললেন, ভালো নেই। অসুস্থতার কারণে ঘরের বাইরে যেতে পারি না। খুব অস্বস্তির মধ্যে আছি। কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বললেন।
অভিনয়, ক্যামেরা, নিজের কর্মক্ষেত্র এফডিসিকে খুব মিস করেন বলে জানিয়েছেন প্রবীর মিত্র। চার দেয়ালের মাঝে তাকে একদিন বন্দি হয়ে যেতে হবে তা কখনো ভাবেননি বাংলা সিনেমার এই নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা।
এই অভিনেতা বলেন, মনে হয় হাজার বছর অভিনয় করি না। খুব মন চায় অভিনয় করি। এফডিসি যাই, আবার আড্ডা দেই পরিচিত মানুষজনের সঙ্গে। এফডিসি যাওয়ার জন্য আমার মন ছটফট করে।